পাকি থেকে গোপালী


একটা বিষয় চিন্তা করলাম।
 
১৯৫২ সালে পাকিস্তান সরকার উর্দূকে ‘অফিসিয়াল ভাষা’ করতে চেয়েছিল!
সেজন্য আমাদের অনেককে শহীদও হতে হয়েছে।
 
ভাষা আন্দোলনের মহান সৈনিকরা ঐ সময় আন্দোলন না করলে- রাষ্ট্রভাষা বা অফিসিয়াল ভাষা হয়তো আমাদের উর্দু-ই হতো; তবে, মূল ভাষা বাংলাই থাকতো।
 
উর্দূ পাকিস্তানের মাত্র ৭% মানুষের মাতৃভাষা; যদিও পাকিস্তানের অফিসিয়াল ভাষা সমানভাবে উর্দূ ও ইংলিশ।
 
পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ইংলিশ ও উর্দূ হলেও- পাকিস্তানীরা ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে নিজেদের আঞ্চলিক ভাষাতেই কথা বলে থাকে যদিও সকলেই ইংলিশ ও উর্দূ জানে। ভারতে যেমন অফিসিয়াল ভাষা ইংলিশ ও হিন্দি এবং সারাদেশের মানুষই তাদের নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষাতেই কথা বলে যদিও প্রায় সকলেই হিন্দি ও ইংলিশ জানে।
 
ভাষা যাই হোক- পাকিস্তান আমলে আমরা অন্তত মন খুলে কথা বলতে পারতাম।
 
যা মন চায় তা উচ্চারণ করতে পারতাম।
মুখের স্বাধীনতা ছিল তখন।
 
পাকিস্তান সরকারের পুলিশ তখন কথায় কথায় গুম-খুন করতো না।
কাউকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করলে- রাজবন্দী হিসাবে যথাযথ সম্মান প্রদান করা হতো।
 
আর, এখন গোপালগঞ্জ সরকারের আমলে মানুষ মন খুলে কথাও বলতে পারছে না।
 
স্বাধীন মতামত ব্যক্ত করতে পারছে না।
মানবাধিকার তো বাংলাদেশে কোন কালেও ছিল না।
 
দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের মহাসচিব’কে কথায় কথায় জেলের ভাত খাওয়ানো হয়।
 
তখন কিন্তু এসব হতো না।
 
আওয়ামী লীগ সরকারের চেয়ে পাকিস্তান সরকার হাজার গুনে ভাল ছিল। পাকিস্তান সরকার দেশের মানুষের টাকা লাগামহীনভাবে হরিলুট করেনি।
পাকিস্তান সরকারের পুলিশ কি কোনদিন কাউকে গুম করেছিল?
পাকিস্তান সরকারের পুলিশ কি কোনদিন কাউকে ক্রস ফায়ারে দিয়ে হত্যা করেছিল?
 
তখন ১৫০০ মাইল দুরের দেশ পাকিস্তান থেকে তারা আমাদের অযোগ্যতার সুযোগ নিয়ে শাসন-শোষন করেছে।
 
আমরা যোগ্য হলে বরং আমরা-ই তো করাচী গিয়ে ওদের শাসন করে আসতাম- কিন্তু সেই যোগ্যতা আমাদের ছিল না।
 
নিজেদের অযোগ্যতা নিয়ে কি আমরা কোনদিন সাহস করে কথা বলেছি?
 
আর আজ ১৫০ মাইল দুরের একটা জেলা শহর থেকে ‘গোপালগঞ্জ সরকার’এর কিছু পথভ্রষ্ট-লোক সারাদেশে শাসনের নামে ষ্টিম রোলার চালাচ্ছে; কথায় কথায় গুম, খুন, গ্রেফতার, ক্রসফায়ার চালাচ্ছে। দেশের মানুষের টাকা লুট করে খাচ্ছে।
 
গোপালগঞ্জ সরকার তো এখন সাধারণ মানুষকে নিজস্ব মাতৃভাষা ‘বাংলা’য়-ও কথা বলতে দিচ্ছে না!
 
তাহলে কি লাভ মাতৃভাষা দিবস পালন করে?
 
পাকিস্তান-ই তো ভাল ছিল!
 
যুক্তির বিচারে নির্দিধায় বলা চলে ‘জয় বাংলা’ বলার চেয়ে- শেখ মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষনের মতো ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলাই বেশী যুক্তিযুক্ত।
অথবা, কোন পার্থক্যও নেই।
 
গেল বছর পাকিস্তান-ভারতের উত্তেজনায় যদিও বিশ্বাস করতাম- কোন যুদ্ধ হবে না; তথাপিও আমি খুব চাচ্ছিলাম যুদ্ধটা হোক।
 
পাকিস্তান জিতুক বা ধ্বংস হোক কিংম্বা ভারত জিতুক অথবা ধ্বংস হোক- তা নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যাথা ছিল না।
 
কিন্তু, যুদ্ধটা লাগলে- হাসিনাকে যে খুঁজে পাওয়া যেত না সে বিষয়ে আমি শতভাগ নিশ্চিত ছিলাম।
 
ভারত বাবাজি তখন নিজের পিঠ বাঁচাতেই বেশী ব্যস্ত থাকতো- ‘গোপালগঞ্জ’ এর দিকে তারা অন্তত খেয়াল করার সময় পেত না!
 
মি. আজরাইল এখন কোন দিকে যে অপারেশনে ব্যস্ত সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না! আর কতকাল এভাবে চলবে?
 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *