ইসরেল দেশটার প্রতি আমার অসম্ভব কৌতুহল।
যেদিন প্রথম জানতে পারলাম বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে ইসরেল যাওয়াটা বাংলাদেশ সরকার অনুমোদন করে না- সেদিন থেকেই কৌতুহলটা আরও বেশী বেড়ে গেছে।
বৃটিশ সরকার ১৯৪৮ সালের ১৪ই মে জোরপূর্বক আরব অঞ্চলের প্যালেষ্টাইন নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে ফিলিস্থিনিদের উচ্ছেদ করে ইওরোপিয়ান ইহুদীদের ঐ জায়গায় বসতি স্থাপনের সুযোগ করে দেয় এবং দেশটির নাম করণ করা হয় ‘ইসরেল’।
অবশ্য এর আগে, ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সময়টাতে তৎকালিন জার্মান চ্যান্সেলর এডলফ হিটলার ৬ মিলিয়ন (কারো কারো হিসাবে ১১ মিলিয়ন) ইহুদীকে হত্যা করেন।
বিশ্বের একমাত্র ইহুদী রাষ্ট্র ইসরেল-এ বর্তমানে মোট ইহুদী’র সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ মিলিয়ন। অপরদিকে আমেরিকায় ইহুদী’র সংখ্যা প্রায় ৭ মিলিয়ন। এছাড়াও ফ্রাঞ্চ, কানাডা, বৃটেন, রাশিয়া, আর্জেন্টিনা, জার্মানী এবং অষ্ট্রেলিয়াতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ইহুদীর বসবাস রয়েছে। এছাড়াও টার্কি, ইরান, উজবেকিস্থান ও ভারতেও বেশকিছু ইহুদীর বসবাস। এবং মজার বিষয় হলো সারা পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই খুব অল্প সংখ্যক করে হলেও ইহুদীর বসবাস রয়েছে।
ইহুদী রাষ্ট্র ইসরেল তাদের জন্মের এক বছর আগে জন্ম নেয়া পাকিস্তান রাষ্ট্রকে নিজের জন্মের প্রায় সংগে সংগেই (পাকিস্তানকে) স্বীকৃতি প্রদান করে এবং কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করে যদিও সেই স্বীকৃতিকে প্রত্যাখ্যান করে উল্টো পাকিস্তান তাদেরকে কোনদিনই স্বীকৃতি দেয়নি।
৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশ ভুটান। এবং দ্বিতীয় স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশ ছিল ইসরেল- কিন্তু বাংলাদেশ সংগে সংগেই ইসরেলের স্বীকৃতিকে গ্রহনে অস্বীকৃতি জানায় এবং ইসরেলকেই অবৈধ রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষনা করে।
বাংলাদেশ বা পাকিস্তান ইসরেলকে স্বীকার না করলেও ভারতসহ টার্কি, জর্ডান, মিশর প্রমুখ ইসলামী দেশের সংগে ইসরেল এর কুটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।
আমার সংগে প্রথম যে ইসরেলী নাগরিকের সংগে পরিচয় হয় তার নাম ছিল জেনিফার।
সেটা ১৯৯৬ সালে, দার্জিলিং এ; আমার প্রথম ভারত ভ্রমনে। একই সংগে রূপবতী ও বুদ্ধিমতি জেনিফারের সংগে রাষ্ট্রিয়ভাবে কুটনৈতিক সম্পর্ক না থাকায় ‘আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক’ আর অগ্রসর হতে পারলো না! 🙁
এই পৃথিবীতে সর্বমোট ইহুদীর সংখ্যা মাত্র ১৪ মিলিয়ন বা ১ কোটি পঞ্চাশ লাখেরও কম।
কিন্তু সবচে অবাক করা কান্ড হলো এই অতি অল্প সংখ্যক ইহুদীরাই বলতে গেলে সারা পৃথিবীর বাকী ৭০০ কোটি মানুষের উপর ছটি ঘুরিয়ে যাচ্ছে অবিরত।
এবং এই বিষয়টাই আমাকে অবাক করে।
হতবাক করে।
আমি বিস্মিত হই।
এবং বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামাই।
আমাদের হযরত মুসা (আ.) কে ইহুদীরা তাদের ধর্মের প্রধান নবী হিসাবে মানে।
তবে, ইহুদী ধর্মমতে তাদের সর্বমোট নবীর সংখ্যা ৫৩ জন; যার মধ্যে ৪৬ জন পুরুষ নবী এবং বাকী ৭ জন মহিলা নবী।
নিউ ইয়র্কে প্রচুর সংখ্যক ইহুদীর দেখা মিলে। আমার ব্যক্তিগত ইহুদী বন্ধুর সংখ্যাও এখন দুই-ডিজিট এর ঘরে। এরা ধর্মের প্রতি ততটা মনোযোগী না- যতটা মনোযোগী ব্যবসায়ের প্রতি।
তবে ইহুদীদের মাথা গিজগিজে বুদ্ধিতে ভড়া।
আমি যখন ইহুদীদের সংগে কথা বলি- নিজেকে খুবই সতর্ক রাখি; খুব মেপে কথা বলার চেষ্টা করি। আমি সত্যিই ওদের বুদ্ধি দেখে বহুবার মুগ্ধ হয়েছি, বিস্মিত হয়েছি; এবং শিখেছি।
আমার পরিচিতির ইহুদীদের গন্ডিটা খুবই ছোট। এবং ওরা উল্লেখযোগ্য বা সেভাবে নামী কোন মানুষ নয়।
কিন্তু আমি বেশ কিছু ইহুদী সম্পর্কে জানি যাদের সারা পৃথিবীই অতি সম্মানের সংগে চিনে।
ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ শতভাগ ইহুদী।
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এর প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস আধা ইহুদী।
নীচে কয়েকজন বিশ্ব বিখ্যাত ব্যক্তির নাম ও তাদের অর্জিত টাকার পরিমানটা একটু দেখুন:
Larry Ellison, Oracle Corporation ($72.5 billion)
Former New York City Mayor Michael Bloomberg ($35.5 billion)
Just 30 years old man Mark Zuckerberg ($33.4 billion)
Casino Magnate Sheldon Adelson ($31.4 billion)
Google co-founders Sergey Brin and Larry Page ($29.2 and $29.7 billion)
Investors George Soros ($24.2 billion)
Carl Icahn ($23.5 billion) and Len Blavatnik ($20.2 billion)
and Dell Computer Founder Michael Dell ($19.2 billion)
আরো কয়েকজন ব্যক্তিত্বের নাম লক্ষ্য করুন- যারা সকলেই ইহুদী:
Jacob A. Frenkel, chairman of JPMorgan Chase International
Sandy Weill, former Chairman and CEO of Citigroup
Steve Ballmer, was CEO of Microsoft
Jan Koum, Ukrainian-American co-founder and CEO of WhatsApp
Susan Wojcicki, CEO of YouTube
Gerald Levin, Time Warner, CEO of HBO
Adolph Zukor, founder of Paramount Pictures
উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গের নাম, অবস্থা ও তাদের টাকার পরিমানটা দেখলে অতি সহজেই বোঝা যায়- তাদের অবস্থান কতটা উপরে বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থাপনায়।
আমেরিকা পুঁজিবাদী দেশ; যেখানে টাকাই শক্তি।
আর এখানকার টাকার মালিক ইহুদীগণ। আমেরিকার বেশীর ভাগ বড় কর্পোরেট হাউজগুলিই ইহুদী মালিকানায়।
পুজিবাদী আমেরিকান সরকারের কি ক্ষমতা রয়েছে টাকাওয়ালাদের বিরুদ্ধে কোন কিছু করার?
নেই। মোটেও নেই।
অার তাইতো- ৩২ কোটি মানুষের দেশ আমেরিকা মাত্র ৭ মিলিয়ন ইহুদীর কথা মেনে চলতে বাধ্য হয়; যে আমেরিকা নেতৃত্ব দিচ্ছে সারা পৃথিবীকে।
সবই টাকার শক্তি।
যাক, যা বলছিলাম।
সত্যিই ইসরেল দেশটার প্রতি আমার অসম্ভব কৌতুহল।
কারণ ইসরেল বাংলাদেশীদের জন্য নিষিদ্ধ দেশ; আর নিষিদ্ধ বিষয়ের প্রতি মানুষের তো একটু বেশীই কৌতুহল থাকবে।
সেটাই কি স্বাভাবিক নয়?
এবার একটু প্রসংগ পরিবর্তন করি।
বাংলাদেশ নিয়ে একটু আলোচনা করি।
আচ্ছা, বলুন তো বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে কারা? বলতে পারেন?
আমিই বলে দিচ্ছি।
বাংলাদেশ-টাকে বলতে গেলে নেতৃত্ব দিচ্ছে ‘দেশীয় সাংবাদিকরা’- সেলিম ওসমানের ভাষায় যারা ‘খা***-র পোলা’।
কিভাবে?
উত্তরটা অতি সহজ।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, বিচারপতি, সচিব, মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন, পুলিশ-সহ সকল সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই ঘুষখোর এবং চরম অসৎ।
ব্যক্তিগত স্বার্থছাড়া এরা কোন কাজ করে না। এরা চোর। এরা কাউকে ভয়ও করে না। ভয় করবে কেন? যাকে ভয় করবে সে নিজেই-তো আরও বড় চোর; তার নিজেরই পথপ্রদর্শক।
দেশের সাধারণ মানুষের দুই পয়সা মূল্যও নেই মহাক্ষমতাধর এদের কাছে।
সুতরাং তাদের চুরি দিনকে দিন উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা নিয়মিত চুরি করে আরও মোটা তাজা হচ্ছে।
এবং, লক্ষনীয় যে, এসব অসৎ লোকজন খুবই প্রচারমুখী। তাদের পরবর্তী টার্গেট থাকে রাজনীতিবিদ হওয়া, মন্ত্রী হওয়া- আরোও বেশী পয়সা কামানোর রাস্তা তৈরী করা। অথবা শেষ জীবনে ‘সুশিল’ হওয়া। আর এজন্যই তারা অত্যন্ত প্রচারমুখী।
তারা সারাক্ষন চায় তাদের-কে টিভিতে দেখানো হোক, পত্রিকায় তাদের নিয়ে লেখা হোক।
আর এজন্যই তারা সাংবাদিক-দের সংগে একটা সুসম্পর্ক রাখতে অতি-আগ্রহী হয়ে থাকে; উম্মুখ হয়ে থাকে।
কিন্তু, তাদের জন্য একমাত্র সমস্যাও- দেশের ওসব প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া। টেপ ও ক্যামেরাওয়ালা সাংবাদিকরা। সাধারণ মানুষের মতো সাংবাদিকরাও জানে ‘এরা’ চোর। সাধারণ মানুষ এদের সামনে ঘিরতে পারে না; কথা বলার সাহস পায় না। ক্রস ফায়ারকে ভয় করে।
কিন্তু, সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার রয়েছে এদের কাছে। আর সাংবাদিকরাও খুবই সহজেই সুযোগটিও কাজে লাগিয়ে যাচ্ছে।
তাদের কুকর্ম প্রকাশ বা প্রচার করে দেবার ভয় দেখিয়ে সাংবাদিকরা তাদের বশ করে চলছে। সাংবাদিকরা যে যার অবস্থান থেকে যে যেভাবে পারছে; ভয় দেখিয়ে অথবা জায়গা মতো তোষামদী করে নিজের সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে।
এবং সাংবাদিকরাও মাঝে মধ্যে ভাগের টাকায় টান পরলে ফাঁস করে দেয় ‘রডের বদলে বাশ’। তারপর আবারও কিছুদিন সাংবাদিকদের ভয় পায় প্রভাবশালীরা।
অপরদিকে, জায়গামতো মোসাহেবীও তাদের খুব ভালো করেই জানা।
আর তাইতো প্রধানমন্ত্রী’র প্রেস কনফারেন্সে দেখা যায় দেশের প্রধান সম্পাদকদের তোষামদীর প্রতিযোগীতা।
সত্যিই সে এক দারুণ প্রতিযোগীতা।
অার এভাবেই বাংলাদেশে তৈরী হয়েছে মুন্নি সাহা থেকে শুরু করে জই মামুনরা। মোজাম্মেল বাবুরা।
অপরদিকে যারা প্রকৃত সৎ, দেশপ্রেমিক তাদের কোন প্রচার দেখা যাবে না বাংলাদেশে। কারণ তাদের দিয়ে তো সাংবাদিকদের কোন কাজ হবে না।
কাজেই কি দরকার সময় নষ্ট করবার?
সুতরাং বাংলাদেশের সাংবাদিকদের ভয় করুন।
যদি সফল হতে চান।