সভ্যতার প্রতিযোগীতা


ভ্রমণে আমার কিছু বাজে অভ্যস রয়েছে।
গাড়ী নিয়ে ছুটছি, চলতি রাস্তার পাশে কোন একটা নদী বা পাহাড় কিংম্বা গ্রামীন কোন সাধারণ বা অসাধারণ দৃশ্য আমার ভালো লেগে গেল- সংগে সংগে কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গাড়ী পার্ক করে ফেলি!
 
আমেরিকায় এসব বিষয়ে খুব সমস্যা হয়।
অধিকাংশ সময়ই পুলিশ চলে আসে- কোন সমস্যা হলো কিনা সহযোগীতা করতে অথবা সড়িয়ে দিতে।
 
আমার কপাল যেহেতু বরাবরই ভালো- তাই পুলিশ আমাকে কখনওই স্পর্শ করে না, দেখেও না। আর আমিও নিশ্চিন্তে যেখানে যখন মন চায় সিটির বাইরে কোন গ্রামীন রাস্তায় গাড়ী থামিয়ে মন ভরে সৌন্দর্য্যকে উপভোগ করতে থাকি যত্তখন না পর্যন্ত চোখের তৃষ্ণা মিটে!
 
কখনও ছবি তুলি।
তবে, ইদানিং ছবি তুলতে তেমন একটা আগ্রহ বোধ করি না। দু’চোখ ভরে এবং কখনও কখনও চোখ বন্ধ করে দেখেই বেশী সেসব সৌন্দর্য্য লুটি।
 
সমস্যাটা সেখানে না।
সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, আমেরিকায় গাড়ী ড্রাইভ করি রাস্তার ডান দিক ধরে। দেখা গেল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যটা রাস্তার বাম পাশে। তখন আমাকে বাধ্যতামূলকভাবেই ডান পাশে মুল রাস্তার বাইরে গিয়ে গাড়ী পার্ক করে রেখে রাস্তা পার হয়ে বাঁ-পাড়ে চলে যেতে হয়।
 
এতেও কোন সমস্যা ছিল না।
গ্রামীন রাস্তাগুলি এমনিতে একটু ফাঁকাই থাকে। টুক-টাক গাড়ী যাতায়াত করে এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই গাড়ীগুলির স্পীড থাকে ৬০ মাইল/ ঘন্টা।
 
সমস্যাটা শুরু হয় যখন আমি আমার দেখার তৃষ্ণা শেষ করি ঠিক তখনই। বিষয়টা বেশ বিড়ম্বনা সৃষ্টি করে।
 
আমি হয়তো রাস্তার পাশে এসে দাঁড়াই, ভাবি পার হবো না কি আরও কিছুক্ষন থাকবো! কিন্তু ঠিক তখনই রাস্তায় তাকিয়ে দেখি দু’পাশের চলমান সবগুলি গাড়ী রাস্তায় দাঁড়িয়ে গেছে। কেউ নড়ছে না।
 
ভাবুন অবস্থাটা আমার!
ওরা থেমে রয়েছে- যদি আমি এখন রাস্তা পাড় হই সেজন্য।
 
অথচ আমি রাস্তা এখনই পাড় হবো কি না সেটা নিজেই জানি না!
 
অগ্যতা দাড়িয়ে থাকা গাড়ীগুলিকে সম্মান জানাতে দ্রুতই রাস্তা পাড় হয়ে ফিরি নিজের গাড়ীতে।
 
এদেশে এভাবেই প্রতিনিয়ত দেখতে পাই সভ্যতার প্রতিযোগীতা।
 
আর তাই তো নিজেও শরিক হই সে প্রতিযোগীতায়।
খোলা রাস্তায় কোন মানুষ দেখলে (সে পাড় হবে কি হবে না- সেটা পরের বিষয়)- গাড়ী থামিয়ে দিই!
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *