শিশু আয়শা (রা) এর বিবাহ প্রসংগ!


কেউ যদি আমেরিকান ডলারে বেতন পায়, ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরে তার একটা বাড়ী থাকে; সেই বাড়ীতে একজন জাপানিজ তরুনী যদি তার স্ত্রী হিসাবে থাকে এবং তিনবেলা যদি সে চায়নার সিচুয়ান থেকে আনা খাবার খেতে পারে- তাহলে, সেই হবে এই পৃথিবীর সবচে সুখী মানুষ।
 
আমার ধারণা নেই- ঠিক ‘এরকম সুখী মানুষ’ কয়জন পাওয়া যাবে!
 
আমেরিকান ডলার এই পৃথিবীর সবচে শক্তিশালী মুদ্রা।
লন্ডন এই পৃথিবীর সবচে অভিজাত শহর।
জাপানী মেয়েরা স্বামী ও শ্বশুরবাড়ীর জন্য নিবেদিত প্রাণ।
আর সিচুয়ানের খাবার তো আমি নিজেই খেয়েছি পাগলের মতো!
 
বলছিলাম জাপানিজ মেয়েদের কথা।
এরা স্ত্রী হিসাবে সত্যিই অনন্যসাধারণ।
 
তবে, শুধু জাপানিজ মেয়েরা নয়- মূলত ‘এশিয়ান’ মেয়েরাই এরকম।
 
দুঃখিত ম্যাডাম, ‘এশিয়ান মেয়ে’ শুনে আহ্লাদিত হতে যাবেন না যেন!
আপনি এশিয়ানদের মধ্যে পরেন না।
 
আপনি বা আমরা ভুল লেখাপড়া শিখেছি।
আমরা এশিয়ান নই।
 
এশিয়ান তাদেরই বলা হয় যাদের নাক বোঁচা, চোখ ছোট এবং বসবাস ফার-ইষ্ট অঞ্চলে; মানে জাপান, কোরিয়াস, চায়না, আর নীচে ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়ান, ইন্দোনেশিয়ান ইত্যাদি।
 
বাংলাদেশ মহাদেশীয় হিসাবে এশিয়ার পরলেও- আমরা দক্ষিন এশিয়ান বা ‘ইন্ডিয়ান’ হিসাবেই পরিগণিত হই।
 
আমার অনেক বন্ধুই জাপানিজ, চায়নিজ, মালয়েশিয়ান, কোরিয়ান মেয়ে বিয়ে করেছে এবং এদের সকলেই সবসময় তাদের ভূয়সী প্রশংসা করে থাকে। মধ্য এশিয়ার উজবেকিস্থান, কাজাকাস্থান ইত্যাদি দেশের মেয়েরাও ‘স্ত্রী’ হিসাবে ‘অত্যন্ত ভালো’ হয়ে থাকে।
 
আপনি কি জানেন, চায়নাতে ২৬ বছর বয়সী মেয়েরাও হাসতে হাসতে বেশ গর্বের সংগেই বলে ফেলে, ‘আই এম ষ্টিল ইয়াং টু ম্যারী!’।
 
একটা অপ্রিয় বাট আনএভয়েডেবল সাবজেক্ট নিয়ে আজ আর্টিকেলটি লিখতে বসেছি।
 
সম্প্রতি আমার চোখে ফেসবুকে ‘একটা’ বিষয় নিয়ে ‘কথিত সেকুলার’ বাস্তবে ‘সুবিধাবাদী মূর্খ’দের কয়েকটা ভিডিও এবং লেখনী আটকে যায়।
 
আমি তাৎক্ষনাৎ প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম।
ব্যস্ততার জন্য কয়েকদিন সময় লেগে গেল উত্তরটা সাজাতে।
 
এরমধ্যে কিছু ‘চমৎকৃত’ তথ্য পেয়েছি। তা শেয়ারও করেছি।
 
তার পূর্বে একটু ছোট্ট ‘শানে-নজুল’ বলি।
 
সেটা ছিল ২০০৩ এর মার্চ বা এপ্রিল মাস।
পুরানা পল্টন মোড়ে এল মল্লিক কমপ্লেক্স এর ৭ তলায় আমি একটা অফিস ভাড়া নিই।
ওই ভবনের ৬ তলায় ছিল অালিকো লাইফ ইন্সুরেন্স এর অফিস। আমি সাত তলায়।
 
সবে অফিস ভাড়া নিয়েছি। নতুন গ্লাস লাগানো হচ্ছে। ইন্টেরিয়র ডিজাইনেও হাত দেয়া হয় নি। তবে, আমি অফিস করা শুরু করে দিয়েছি।
 
ঠিক ঐ সময়টাতে প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ইরাকে আক্রমণ চালায়। গাল্ফ ওয়ার শুরু হলো।
 
বাংলাদেশের ‘মুসলিম’রা গর্জে উঠলো আমেরিকার বিরুদ্ধে।
তর্জন গর্জন শুরু হয়ে গেল ঢাকাতে।
 
ভাবটা এমন যেন, ঢাকায় বসেই এরা ওয়াশিংটন ডিসি’তে গুলতি ছুড়বে।
 
একদিন শুক্রবার।
জুম্মার নামাজের শেষে ‘একদল মুসুল্লী’ মিছিল নিয়ে আমেরিকার স্বার্থে আঘান হানতে এল মল্লিক কমপ্লেক্সকে বেছে নিল। ওটাতে আলিকো অফিস। ওটা আমেরিকান কোম্পানী।
 
বীর দর্পে ওনারা উঠে আসলেন ৬ তলায়।
কিন্তু শুক্রবার। আলিকো অফিস তো বন্ধ। তালা দেয়া। শক্তিশালী গেট।
 
তাতে কি?
৭ তলাও তো আছে!
 
সেই বীর মুসলিমরা সেদিন ঐ সাত তলায় এই অধমের অফিসে হালকা গেট ভেংগে ঢুকে পরে। তাদের বীরত্ব জাহির করে আমার অফিসের উপর দিয়ে।
 
৪টা নতুন কমপিউটার চুরি করে।
ফ্যানগুলি ভেংগে ফেলে।
১৪ হাজার টাকা দামের এক একটা গ্লাস, এরকম প্রায় গোটা ৪০শেক গ্লাস তারা ভেংগে দেয়।
চেয়ার টেবিল নীচে ছুড়ে মারে।
 
আমার যাবতীয় অতি প্রয়োজনীয় ‘কাগজ-পত্র’ও ওনারা ধ্বংশ করে দেন।
 
তারপর উনারা বিজয়ী হন।
 
আমি আমাদের দেশের ‘মুসলিম’দেরও চিনি।
আমি আমাদের দেশের ‘সেকুলার’দেরও চিনি।
 
আমি গতকাল এবং আজ এই দুই দিন- দু’টি এক লাইনের স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম- যদিও আমি এমন টা করি না কখনও।
 
‘হযরত সোলায়মান (অা) এর মাত্র ৭০০ বউ ছিল’।
এবং
‘শ্রী কৃষ্ণের সর্বমোট ১৬,১০০ বউ ছিল’।
 
গতকাল দেয়া প্রথম স্ট্যাটাসটিতে কিছু ‘মুসলিম’ এর মাথা খারাপ হয়ে যাবার দশা। অবশ্য সংখ্যাটা শতকরা হারে ১% এরও কম- এটাই রক্ষে!
 
এদের একজন আবার আরেক ডিগ্রী এগিয়ে আমার প্রোফাইলে ঢুঁ মেরেছে- আমি নাস্তিক কিনা সেটা দেখতে! আমার প্রোফাইলে ‘রিলিজিয়স ভিও’ সে খুঁজেই পায়নি! কি দুঃখ! কি দুঃখ!
 
সে জন্য আমি ওটা নিয়ে চিন্তা করিনি।
সব সমাজেই এমন দু’একজন থাকবে- সেসব নিয়ে ভাবলে চলে না।
 
আরেকজন দেখলাম, সে ‘রেফারেন্স’ ছাড়া নড়বেই না!
কোরান শরীফের বাইরে না কি কিছুই নাই। আমি জানি না এরা কতটুকু কোরান পড়ুয়া বা মান্যকারী!
 
এই পৃথিবীর সবকিছুই না কি কোরানে দেয়া রয়েছে।
আমি সত্যিই অবাক হই তাদের শিক্ষার দুর্গতি দেখে!
ইসলামটাকে এরা কোথায় নিয়ে নামাবে, নামাচ্ছে!
 
আপনি এতটাই যেহেতু জানেন- নিজে রেফারেন্স এনে আমাকে ভুল প্রমাণ করে দিন!
 
আমি যা বলি, সেটা দায়িত্ব নিয়েই বলি। ওটার আমিই রেফারেন্স।
আমি আমার কাছেই দায়বদ্ধ।
 
সত্যি বলতে কি, এসব ‘অতিক্ষুদ্র মানসিকতাসম্পন্ন মুসলিম’দের জন্যই ওসব ‘কথিত নাস্তিক্যবাদী’রা মুলতঃ ‘ইসলাম-বিরোধী’ বক্তব্য দেবার সুযোগ পায়, সাহস দেখায়।
 
গতকালের বাদশাহ সোলায়মান (আ) এর ৭০০ বউ এর বিষয়ে পড়ে কোন অমুসলিমকে দেখেনি এর স্বপক্ষে কোন কথা বলতে বা কমেন্ট দিতে।
 
কিন্তু আজ যখন আরও একটা তথ্য প্রকাশ করলাম, “শ্রী কৃষ্ণের সর্বমোট ১৬,১০০ বউ ছিল”- তখন দেখলাম কয়েকজনের মাথা খারাপ হয়ে যাবার জোগার!
 
আমি তাদের অত্যন্ত ভদ্র ভাষায় বলেছিও- প্রমাণ দিন আমার কথাটা ভুল বা মিথ্যা- আমি ক্ষমা চাবো। কিন্তু আমাকে সেই সুযোগ না দিয়ে কিছু গালাগালি করে ব্লক করে দিয়ে চলে গেছে।
 
এবার মুল আলোচনায় ফিরি।
 
বিষয়টা ছিল মুহাম্মদ (সা) এর বহু বিবাহ এবং বিশেষ করে আয়েশা (রা) কে মাত্র ৯ বছর বয়সে বিয়ে করার বিষয়টি নিয়ে। আয়েশা (রা) কে নিয়ে পঞ্চাশ উর্ধ মুহাম্মদ (সা) এর যৌনতা নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক ভাষায় অনেক অশ্লিল কথা, ভিডিও আমার চোখে পরেছে।
 
মুহাম্মদ (সা) এমন সাধারণ কোন মানুষ না যে- দু’চারটা অসুস্থ্ মস্তিস্ক, নোংড়া মানসিকতা ও অল্প শিক্ষিত ‘কথিত নাস্তিক’ কি বললো বা না বললো- এতে তাঁর বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে।
 
মুহাম্মদ (সা) এমন একজন মানুষ- যাকে আমেরিকার মতো একটা সর্বাধুনিক ইহুদী নিয়ন্ত্রিত খৃষ্টান দেশ হয়েও তাদের সুপ্রিম কোর্টে বড় সাইনবোর্ডে ‘সেরা আইন প্রণেতা’র মর্যাদা প্রদান করেছে।
 
মুহাম্মদ (সা) এমন একজন মানুষ যাকে এই পৃথিবীর প্রতিটি মনীষি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসাবে সম্মান করে।
 
রাজনীত, বিচারক, যোদ্ধা, শাসক, জনপ্রতিনিধি, সমরবিদ হিসাবে মুহাম্মদ (সা) এর ধারে কাছেও কেউ কোনদিন দাড়াতে পারেনি- পারবেও না।
 
পশ্চিমের বিখ্যাত লেখক মাইকেল হার্ট তার ‘দ্য হান্ডেটস’ গ্রন্থে পর্যন্ত মুহাম্মদ (সা) কে সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন।
 
বর্তমান পৃথিবীর ১.৭ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে অন্তরের পবিত্র ভালবাসায় ধন্য মুহাম্মদ (সা)।
 
সুতরাং ওমন হাতে গোনা মূর্খ, জামার্নীর ভিসা পাবার লোভে মুহাম্মদ (সা) কে কয়েকটা গালি দিলে- সেগুলি তাদের উপরই গিয়ে পরে। এতে মুহাম্মদ (সা) এর ইজ্জতের কোন ক্ষতি-বৃদ্ধি ঘটে না।
 
মুহাম্মদ (সা) ওতটা হালকা বা ঠুনকো কোন মানুষ না!
মুহাম্মদ (সা) শুধু একজনই, একবারই এসেছেন এই পৃথিবীতে।
 
সুতরাং ওদের কথার উত্তর দিয়ে আমি ওদেরকে ইমপর্টেন্সী দিতে আগ্রহী নই মোটেও।
 
আমি লিখতে বসেছি আমার মতোই যারা ওসব লেখা বা ভিডিও তে মনে আঘাত পেয়েছে- তাদের উদ্দেশ্যে।
 
তাদের কে কয়েকটা পয়েন্ট মনে করিয়ে দিতে- যেন কষ্ট না পায়; প্রতিবাদ যেন যুক্তির বাইরে না যায়।
 
মুহাম্মদ (সা) এর সম্মান রক্ষা করবো- অতটা যোগ্যতা আল্লাহ আমাকে দেন নাই বা তার কোন প্রয়োজনও নেই।
 
মহান আল্লাহই ওনাকে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসাবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
 
কে কি বলল, না বলল- এতে তাঁর কিছুই এসে যায় না।
তারপরও আমি কয়েকটা অতি সহজ যুক্তি তুলে ধরছি। অন্তত, আপনি নিজে নিজের কাছে পরিস্কার থাকুন।
 
মুহাম্মদ (সা) সর্বমোট ১৩টি অথবা ১১টি বিয়ে করেছিলেন।
তিনি কেন এতগুলি বিয়ে করেছিলেন, সেটা জানা দরকার।
 
কিছু মানুষ ইসলাম বা কোরান নিয়ে কিছু ভুল কথা বলে বেড়ায় আর সেটা হলো, ‘পুরুষদের ৪টি বিয়ে করতে বলা আছে’- কথাটা সর্বৈব মিথ্যা।
 
সুরা আন-নিসা (৩:৩) তে পরিস্কার বলা রয়েছে, ‘Marry women of your choice, two, or three, or four; but if ye fear that ye shall not be able to deal justly (with them), then only one’.
 
এরচে পরিস্কার ব্যাখ্যা কি আর দরকার রয়েছে?
 
দেখুন কথাটা কতটা পরিস্কার যে, যদি তোমরা সম্পূর্ণ সমানভাবে প্রত্যেককে রাখতে পারো- কাউকে কম বেশী করা যাবে না।
 
এবার আমাকে বলেন দেখি কে বলতে পারবেন- চারটি বিয়ের কথা বলা রয়েছে? আপনি পারবেন ৪টি বউকে সম্পূর্ণ সমানভাবে রাখতে? ইমপসিবল। যাষ্ট ইমপসিবল।
 
আরেকটু দেখুন। এই একই সুরাতে (৩:১২৯)- ‘Ye are never able to be fair and just as between women’.
 
এরপরও কি আরো কিছু জানার দরকার রয়েছে- পবিত্র কোরানের নির্দেশনা?
 
অর্থাৎ পবিত্র কোরানের নির্দেশনা অতি পরিস্কার এবং তা হলো, ‘Marry Only One”.
 
করবেন ৪টি বিয়ে, এখনও?
 
হ্যাঁ। মুহাম্মদ (সা) তাঁর প্রত্যেক স্ত্রীকে সমানভাবে দেখেছেন।
সমান ‘সময় হিসাব করে’ সময় দিয়েছেন। আয়েশা (রা) অল্পবয়সী বলে তাকে ৫ মিনিটও বেশী সময় কোনদিন দেননি মুহাম্মদ (সা)।
 
মুহাম্মদ (সা) ২৫ বছর বয়সে বিধবা খাদিজা (রা) কে যখন বিয়ে করেন তখন খাদিজা (রা)র বয়স ছিল ৪০ বছর। মুহাম্মদ (সা) এর বয়স ৫০ পর্যন্ত তার একজন ওয়াইফ-ই ছিলেন। দ্বিতীয় কেউ ছিল না।
 
বয়স ৫০ থেকে ৫২ পর্যন্ত দুই বছরকাল মুহাম্মদ (সা) সম্পূর্ণ একা থেকেছেন। এসময় মুলতঃ খাদিজা (রা) এর মৃত্যুতে শোকাগ্রস্থ ছিলেন এবং কন্যাদের সান্নিধ্যেই সময় কাটিয়েছেন।
 
মুহাম্মদ (সা) ৫৩ বৎসর বয়স থেকে ৬০ বৎসর বয়স পর্যন্ত আরও ১০ বা ১২টি বিয়ে করেছিলেন।
 
একমাত্র আয়েশা ব্যতিত অন্য কোন স্ত্রীই কুমারী ছিলেন না। রাষ্ট্রিয়, সামাজিক কুসংস্কার রোধে, যুদ্ধ মিমাংসা বা যুদ্ধ-বন্ধি মেয়েদের গতি করতে, দুর্বল ও দুস্থ বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত, পিতৃহীন ও বৃদ্ধ নারীদের, কুপ্রথা বিলোপসহ নানা কারনে মুহাম্মদ (সা) বিয়েগুলি করেছেন। কারো জীবন বাঁচাতে, এমনকি শুত্রুর মেয়েকেও তিনি বিয়ে করেছেন। এখানে কোথাও তার যৌনকাংখা খুঁজে পাওয়া যায় না। এছাড়া ঐ বয়সে মুহম্মদ (সা) এর সার্বক্ষনিক সহায়তাকারী, পাহাড়াদার, খেদমাতকারী হিসাবেও স্ত্রীদের সহায়তা পাওয়া যেত।
 
মুহাম্মদ (সা) এর উন্নত, আদর্শ চারিত্রিক দিক বিবেচনায় না নিয়ে অনেক কথাই বলা যায়। আয়েশা (রা) কে যখন বিয়ে করেন তখন তার বয়স ছিল ৯ বছর। তবে, বিয়ের পরও যথেষ্ঠ ছোট বিধায় আরও ২ বছর পিত্রালয়েই ছিলেন আয়েশা (রা); অর্থাৎ ১১ বৎসর বয়েসে তিনি মুহাম্মদ (সা) এর ঘরে উঠেন।
 
আয়েশার (রা) এই ছোট বয়সে মুহাম্মদ (সা) এর সংগে বিয়ের বিষয়ের পক্ষে বলার আগে আমি কয়েকটা কথা বলবো।
 
শ্রী কৃষ্ণ ১৬,১০০ বিয়ে করেছিলেন কেন? আপনি এর উত্তর দিতে পারবেন?
বাদশাহ সুলায়মান (আ) ৭০০ বিয়ে করেছিলেন কেন? পারবেন উত্তর দিতে?
 
ওটা ছিল তখনকার বাস্তবতা।
 
আপনি কি জানেন শেখ মুজিবের সংগে যখন ফজিলাতুন্নেছার বিয়ে ঠিক হয় ১৯৩২ সালে- তখন ফজিলাতুন্নেছার বয়স ছিল মাত্র ৩ বছর। এর ৮ বছর পর ফজিলাতুন্নেছা শেখ মুজিবের ঘরে বউ হয়ে যায়। কেমন লাগছে শুনতে?
 
১৮৮৩ সালে যখন মৃনালিনী দেবী মাত্র ১০ বছরের শিশু তখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঐ শিশুকে বিয়ে করে নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসেন।
 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো আপনাদের অনেকেরই ‘দেবতা’ বা ‘ভগবান’- এই তথ্যটুকু কি জানেন?
 
আমি মুহাম্মদ (সা) এর ৯ বছর বয়সী শিশু বিয়ে করার সংগে শেখ মুজিব বা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিশু বিয়ে কে তুলনায় আসছি না।
 
আমি শুধুমাত্র যে বিষয়টা চোখে আংগুল দিয়ে বোঝাতে চাচ্ছি, তা হলো- শেখ মুজিব বা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কালটা কিন্তু মাত্র সেদিন; আজ থেকে একশত বা দেড়শত বছর আগের; সময়ের বাস্তবতায় এভাবেই বিয়ে হতো। ঐ বয়সী মেয়েদেরই বিয়ে হতো।
 
অপরদিকে মুহাম্মদ (সা) বিয়েটা করেছিলেন আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে।
 
আপনি ‘দেড়শত বছর আগের বাস্তবতা’ চিন্তা করতে ব্যর্থ- ১৪০০ বছর আগের এবং ভিন্ন দেশের (আরবের) বাস্তবতা কিভাবে চিন্তা করবেন?
 
ঐ সময় আরবে আরও কম বয়সী শিশুদেরও বিয়ে হতো।
ওটাই ছিল তখনকার সামাজিক বাস্তবতা।
 
কোন যুক্তি উপস্থাপন করতে হলে- আপনাকে বাস্তবতার চিন্তা মাথায় নিয়ে তা উপস্থাপন করতে হবে।
 
আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগেও এই ভারতবর্ষের হিন্দু মেয়েদের বিয়ে হয়েছে ৫-৭ বছর বয়সে। ভুলে গেছেন? এই সেদিনও এই ভারতবর্ষের হিন্দু তরুনী স্ত্রীদের তাদের মৃত স্বামীর সংগে আগুনে জীবিত পুড়িয়ে দাহ করা হতো। ভুলে গেছেন?
 
১৪০০ বছর আগে সেই আরবের অবস্থাও ‘অনুরূপ খারাপ’ই ছিল। এবং মুহাম্মদ (সা) ওসব সংস্কার করেছেন।
 
আপনি ২০১৭ সালের ‘শিশু’ আর ৬০০ সালের ‘শিশু’কে একই বাস্তবতায় দেখলে বলতে হবে- আপনি শুধু চরম অশিক্ষিতই নন, অন্ধও।
 
আপনি বরং জামার্নী যাবার চেষ্টা বাদ দিয়ে থালা নিয়ে মতিঝিল অফিস পাড়ায় গিয়ে ভিক্ষে করুন। ওটাতেই আপনাকে বেশী মানাবে।
 
আপনি তো জানেন ই না যে:
সাউথ আফ্রিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা’র চারটি স্ত্রী রয়েছে।
আপনি কি জানেন, ইথিওপিয়ায় পাহাড়ী অঞ্চলে এখনও যে মেয়েরা তাদের বুক উম্মুক্ত রাখে- ওটাই ওখানকার কালচার।
আপনি কি জানেন যে, মিশর আর আলজেরিয়ার মেয়েদেরও সুন্নতে খৎনা করা হয়!
আপনি কি জানেন যে, ভুটানের সাবেক রাজা জিগমে সিগমে ওয়াংচুক একই পরিবারের আপন ৪ বোন কে একংগে বিয়ে করেছেন এবং তাদের নিয়ে এখনও একসংগেই বসবাস করছে।
 
না।
আপনি এসব কিছুই জানেন না।
 
কারণ এসব বৈচিত্রপূর্ণ কালচার, বৈচিত্র সামাজিক অবস্থা, অচিন্তনীয় অথচ বাস্তবতা আপনি জানেন না।
 
পড়েননি কোনদিনও। আপনি কোত্থেকে জানবেন?
 
আর জানেন না বলেই আজ থেকে ১৪০০ বছর আগের বাস্তবতাকে অবলীলায় অস্বীকার করে যেতে পারেন।
 
আর আপনারাই এসব কথা তুলেন, যারা কিনা- ঢাকা শহরের ‘সভ্য-সামাজিকতা’কে অগ্রাহ্য করে নিদির্ধায় পরকীয়ায় মত্ত হন, বিয়ে ছাড়াই বান্ধবীকে নিয়ে লিভ টুগেদার করেন।
 
আপনাদের সংগে কথা বলতে তো আমার ঘৃণাই হয়।
তাই, উত্তরগুলি আপনাদের না দিয়ে- যারা মনে কষ্ট পায় তাদের দিলাম।
 
আশা করবো এরপর থেকে শুধু চোখ দিয়েই নয়, চোখ বন্ধ করেও দেখার চেষ্টা করবেন।
 
তাহলে অনেক সমস্যারই জট খুলে যাবে।
নিজেকে কিছুটা হলেও মানুষ মনে হবে।
 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *