‘বীর কোদাল’


 
 
‘আমাদের বয়সী যে-কোনো মানুষকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, তার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় দিন কোনটি? সে অবধারিতভাবে বলবে, সেটি হচ্ছে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। আমি মনে করি, আমাদের বয়সী মানুষরা যারা সেই দিনটিতে বাংলাদেশের জন্ম হতে দেখেছি, সেই সময়ের তীব্র আনন্দটুকু পৃথিবীর খুব কম মানুষ অনুভব করেছে।’
 
বাংলাদেশের জন্ম কি তাহলে ১৬ই ডিসেম্বর!
কিভাবে বাংলাদেশের জন্ম ১৬ই ডিসেম্বর হয়? জাফর সাহেব বলবেন কি? জিপিএ পাইপপ্রাপ্তদের মতো আপনিও তাহলে ‘দেশের জন্মদিন’ তৈরী করে ফেললেন। ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস (যেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হয়)কে জন্ম দিবস বললেও হয়তো কিছুটা মানিয়ে নেয়া সম্ভব ছিল! ৯ মাস বয়সে করো জন্ম হয়- এটা আপনার কাছে শিখে তো দেশের ছেলে-মেয়েরা ‘জিপিএ পাইপ’ই হবে; তাই না?
 
তাছাড়া ভুখন্ডটির জন্ম তো কোটি কোটি বছর অাগেই।
বাঙালী জাতির জন্ম ও হাজার হাজার বছর আগে। বাংলাদেশটির জন্ম হয়েছে মুলত ভারতবর্ষ ভেংগে পাকিস্তান জন্মের মধ্য দিয়ে সেই ১৯৪৭ সালে। তারপর ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস বা জাতিয় দিবস (জন্ম দিবস বলে কিছু নেই) বিজয়ে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস। সিম্পল বিষয় জটিল করার কিছু নেই।
 
“এ রকম সময়ে কিছু না করে চুপচাপ বসে থাকা যায় না, তাই কিছু একটা করার উদ্দেশ্যে একটি কোদাল দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে ঘরের উঠানে একটা ট্রেঞ্চ খুঁড়ে ফেলা হলো। ট্রেঞ্চের ওপরে একটা ঢেউটিনের আস্তরণ। যখন গোলাগুলির শব্দ খুব বেড়ে যায়, তখন বাচ্চাগুলোকে নিয়ে সেই ট্রেঞ্চের ভেতর বসে থাকি।”
 
বাহ্ বা! কি মধুর স্মৃতিচারণ।
‘গর্ত’ শব্দটি বলতে একটু লজ্জা পাচ্ছিলেন মনে হয়- তাই ‘ট্রেঞ্চ’ বলে দিলেন। একটু যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব আনলেন; তাই না মিষ্টার জাফর!
 
যে দেশে ১৪ বছরের ছেলেরা জীবন বাজী রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছে সেই দেশে আপনি ২০ বছরের তরতাজা যুবক গর্তে লুকিয়ে ছিলেন! কি মজা তাই না মিষ্টার জাফর!
 
আর এখন এসছেন মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাতে! আপনার মতো নষ্ট লোকের (যার দেশের প্রতি বিন্দুমাত্র দায়বদ্ধতা ছিল না) কাছে কে মহান মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে চায়?
 
“‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে ছিল শুধু আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে। কেউ সেই স্লোগানটি উচ্চারণ করলেই মানুষ ধরে নিত সেই মানুষটি নিশ্চিতভাবে আওয়ামী লীগের কর্মী। দেশের মানুষ মনে হয় ভুলেই গেল যে এটি কোনো রাজনৈতিক দলের স্লোগান ছিল না। এই স্লোগানটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র গর্জে ওঠার আগে তাঁদের কণ্ঠ থেকে প্রকম্পিত হতো এই স্লোগান।
গণজাগরণ মঞ্চের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই যে তারা মুক্তিযুদ্ধের সেই স্লোগানটি আবার আমাদের উপহার দিয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য না হয়েও এখন একজন শুধু মুক্তিযুদ্ধের প্রতি গভীর ভালোবাসায় জয় বাংলা স্লোগানটি দিতে পারে!”
 
‘জয় বাংলা’ এখনও আম্লীগ ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যেই বেঁচে রয়েছে- চাঁদাবাজীর শুরুতে তারা এখনও বলে জয় বাংলা। ছাত্রলীগ ধর্ষনের শুরুতে, কাউকে চাপাতি দিয়ে কোপানের শুরুতে এখনও ‘জয় বাংলা’ই বলে।
 
গণজাগরণ মঞ্চ তাদের বিরীয়ানী খাবার বা রাতের প্রকাশ্য কনডম ব্যবহারের আগে জয় বাংলাই বলে! আপনিও তো ঐ দলেরই লোক- আপনি তো বলবেন ই! জয় হিন্দ জয় বাংলা এসব তো আপনাদেরই মানায়।
 
শেখ মুজিবর রহমান ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন হয়ে তার ‘জয় বাংলা’র ব্যবহার দেশবাসীকে দেখিয়ে দিয়েছিল আর এখন দেখাচ্ছে আপনাদের মাধ্যমে শেখ হাসিনা নিজেও। হাচিনার মরণের মর ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ থেকে চির জীবনের জন্য জয় বাংলা এবং সংগে আপনারাও উচ্ছেদ হবেন, হবেনই।
 
“এক সময় আমরা পাকিস্তানের অংশ ছিলাম। সেই পাকিস্তান দেশটির জন্য যে লাহোর প্রস্তাব ছিল, সেখানে বহুবচনে দুটি দেশের কথা বলা হয়েছিল। ‘মুদ্রণ প্রমাদ’ বলে দুটি দেশের ধারণাটিকে সরিয়ে একটি পাকিস্তান তৈরি করা হয়েছিল।”
 
লাহোর প্রস্তাবের ঠিক কোন অধ্যায়ে, কোন আয়াতে ‘মুদ্রণ প্রমাদ’ হয়েছিল- একটু দেখাবেন জাফর সাহেব! মিথ্যায় আপনি পরিপূর্ণ সেটা আমরা জানি- কিন্তু দেশের মানুষকে আপনি আপনার নিজের স্ট্যাইলে মিথা বলে যাবেন আর আমরা চুপ থাকবো- সেটা ভাবা কি ঠিক হবে?
 
আপনি কি জানেন যে, সেই ১৯৪৭ সালে ভারত (মহত্মা গান্ধী, নেহেরু, প্যাটেল) গ্রেটার বেঙ্গল (এবং গ্রেটার পাঞ্জাব) কে দু’টুকরো ছাড়া পাকিস্তানে যোগ দিতে দেয়নি এবং মোহাম্মদ আল জিন্নাহ পাকিস্তানে যোগদানের বিষয়ে বাংলাদেশ নিয়ে কোন আগ্রহই ছিল না। আপনি কি জানেন এই পূর্ব বাংলার মুসলিমরাই মুলত পাকিস্তানের সংগে যোগ দিতে আন্দোলন করেছিল। তাদের আন্দোলনকে ছোট করার স্পর্ধা আপনাকে কে দিল?
 
“জনসংখ্যায় আমরাই ছিলাম বেশি, অথচ সম্পদের বড় অংশ ভোগ করত পশ্চিম পাকিস্তান। পুরো দেশটিই যে ছিল ষড়যন্ত্রের জোড়াতালি দিয়ে তৈরি করা একটি দেশ, সেটি বুঝতে বাঙালিদের মাত্র বছরখানেক সময় লেগেছিল যখন পাকিস্তানের স্থপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ঘোষণা দিয়ে গেলেন উর্দু এবং শুধু উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা! ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন হলো, রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করতে হলো। ১৯৫৪ সালে বঙ্গবন্ধু আর সহনেতারা প্রাদেশিক নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠন করলেন; কিন্তু বছর ঘোরার আগেই সেই সরকারকে বাতিল করে দেওয়া হলো। বঙ্গবন্ধু তখন একজন তরুণ রাজনৈতিক নেতা, কিন্তু তাঁর বুঝতে বাকি রইল না যে পাকিস্তানের এই ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তি লাভের একটি মাত্র উপায়, সেটা হচ্ছে স্বায়ত্তশাসন। তিনি ছয় দফার আন্দোলন শুরু করলেন।”
 
জনসংখ্যা আমরা বেশী ছিলাম অথচ সম্পদের বড় অংশ ভোগ করতো পাকিস্তানীরা! এর কি কোন প্রমাণ আপনি দিতে পারবেন? আপনি বলেন তো পাকিস্তান সৃষ্টির পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও গভর্ণর জেনারেলদের মধ্যে কতজন পশ্চিম পাকিস্তানী এবং কতজন বাঙালী ছিলো? ইতিহাস জানেন? কারা কাদের শাসন করেছে?
পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা এবং প্রাদেশিক রাষ্ট্রভাষা এক জিনিস না।
ভারতের রাষ্ট্রভাষা কি বাংলা? না। ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিন্দি ও ইংরেজী। কিন্তু পশ্চিম বংগের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। ত্রিপুরার রাষ্টভাষা কি? মহারাষ্ট্রের রাষ্টভাষা কি? ভারতের ৩০টি প্রদেশের রাষ্ট্রভাষা কি হিন্দী?
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা শুধু উর্দূ করার ঘোষনা দিয়েছিলেন- প্রাদেশিক পূর্ব বাংলার রাষ্ট্রভাষা নিয়ে কোন কথা বলেন নি।
মানুষকে আপনারা আর কত বিভ্রান্ত করবেন?
 
এবং পরে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হয়েছিল উর্দু, বাংলা এবং ইংরেজী। অথচ পাকিস্তানের অন্য কোন প্রদেশের আঞ্চলিক (বাংলার মতো) ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করা হয়নি। পশ্চিম পাকিস্তানীরাও বাংলাকে সম্মান করেছিল।
 
১৯৫৪ সালে শেখ মুজিব কে ছিলেন? ইতিহাস জানেন কিছু? মাওলানা ভাষানীর আওয়ামী লীগ যুক্তফ্রন্ট করেছিলো শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের দলের সংগে এবং পূর্ব বাংলার মুখ্য মন্ত্রী ফজলূল হক সাহেব শেখ মুজিবকে প্রথমে মন্ত্রীও করতে চাননি। শেখ মুজিব ছিলেন তখন একজন সহকারী সাধারণ সম্পাদক। আর আপনি শেখ মুজিবকে ১৯৫৪ সালেই বঙ্গবন্ধু বানিয়ে দিলেন!
 
আর ঐ যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করেছিল কে- জানেন?
না, কোন পাকিস্তানী কেউ ঐ সরকারকে বরখাস্ত করেননি- ঐ সময়ের পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রীও তখন ছিলেন পূর্ব বাংলার মানুষ। একটু ইতিহাস পড়ুন মিষ্টার জাফর। সভ্য হোন প্লিজ।
 
ষড়যন্ত্র যদি কিছু হয়েই ছিল সেটা বাঙালীরাই করেছিল- পাকিস্তানীরা।
আর তাইতো পাকিস্তানীরা দুই ভুখন্ডকে এক রাখতে তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে পশ্চিম পাকিস্তানের সবগুলি প্রদেশকে বিলুপ্ত করে ‘ওয়ান ইউনিট’ পাকিস্তান পর্যন্ত গঠন করেছিল। দুই অংশের সমান সুযোগ এই হিসাবে।
 
যেখানে শেখ মুজিব (ছয় দফার প্রণেতা) নিজে বার বার বলেছেন তিনি ছয় দফায় স্বায়ত্বশাসন চেয়েছেন- নিজের বইতে লিখেছেনও; আর আপনি কোন জাফর না আরেক মীর জাফর হয়ে গেলেন যে- ওটা একদফা মানে স্বাধীনতা!
 
“১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার প্রতি স্বীকৃতি জানিয়ে বাঙালিরা তাঁকে একটা অভূতপূর্ব বিজয় উপহার দেয়। “
 
১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালীরা শেখ মুজিবকে অভূতপূর্ব বিজয় উপহার দেয়- এটা অন্তত সত্য বলেছেন; কিন্তু এটা কেন বললেন না যে- যে ব্যক্তি বা দল পশ্চিম পাকিস্তানে ১টি আসনেও জয়লাভ করতে পারেনি সে ব্যক্তি বা দল কিভাবে একটা একক দেশের নির্বাহী প্রধান হবেন?
 
একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে হলে তাকে সর্বমহলে গ্রহনযোগ্য ব্যক্তি হতে হবে। পশ্চিম পাকিস্তানে শেখ মুজিব ১টা আসনেও জয়লাভ করতে পারেননি। রাজধানী করাচীতে নয় প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকায় বসে কিভাবে ‘করাচী’র প্রধানমন্ত্রী হওয়া সম্ভব- এতটা ভাবার যোগ্যতা বাঙালীর ছিল বা এখনও কি আছে?
 
শেখ মুজিবের গুরু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কিন্তু কোলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরে নয়- করাচীতে গিয়ে জাতীয় রাজনীতি করেই প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন; শেখ মুজিবের মতো ঢাকায় বসে আঞ্চলিক রাজনীতি করেননি।
 
“২৫ মার্চ পাকিস্তান মিলিটারি এ দেশে গণহত্যা শুরু করল, ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ।”
 
২৫ মার্চ রাতে গ্রেফতার হয়ে শেখ মুজিব ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে কোথায়, কার কাছে, কার মাধ্যমে, কিভাবে, কোন দলিলে স্বাধীনতার ঘোষনা দিলেন?
 
সকলকে আপনার নিজের মতো ‘গরু-ছাগল’ গোত্রীয় ভাববেন না মিষ্টার জাফর।
 
তাজউদ্দিন সাহেবের লিখে নিয়ে যাওয়া স্বাধীনতার ঘোষনা পত্রে পর্যন্ত শেখ মুজিব স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেছিলেন- তিনি করাচীর কারাগার থেকে মুক্তি পাবার পরও দুই পাকিস্তানের ফেডারেশন চেয়েছেন- যার শত শত দলিল পাওয়া যায়।
 
আপনি কোন জাফর মাষ্টার যে- যা মন চায় তাই-ই বলে দিবেন?
আপনার মতো ভীতু অার সুবিধাবাদী ‘বীর কোদালে’র মুখে জাতি ইতিহাস জানতে চায় না।
 
“ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা আমাকে জিজ্ঞাসা করত, ‘স্বাধীনতার ঘোষক কে?’ (স্বাধীনতা যেন একটি ছেলের হাতের মোয়া, কোনো একজন তার কথা ঘোষণা করলেই দেশ স্বাধীন হয়ে যায়!)। তারা জিজ্ঞাসা করত, রাজাকাররা কেমন করে মন্ত্রী হয়? যারা এ দেশ চায়নি, এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে, তারা কেমন করে এ দেশ শাসন করে? তারা কেমন করে তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়?”
 
ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ কে, রাজাকাররা মন্ত্রী হয় কেন?, গাড়ীতে জাতীয় পতাকা এসব বিষয়ে আপনাকে কোন প্রশ্নই করেনি। কারণ তারা এতশত কিছুই বুঝে না। বরং আপনি আর আপনার মতো কিছু নষ্ট প্রাণী যারা দেশকে দু’ভাবে বিভক্ত করে একটা বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চান- তারাই ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চান। তাদের মাথায় ছোট বেলা থেকেই দু’টি ভাগ ঢুকিয়ে দিতে চান।
 
এসব শুধুই নষ্টদের দ্বারাই সম্ভব; যেমন আপনি মিষ্টার জাফর ইকবাল এবং অন্যজন্য মীর জাফর আলী খান।
 
কি যেন বললেন কথাটা- ‘স্বাধীনতা যেন একটি ছেলের হাতের মোয়া, কোনো একজন তার কথা ঘোষণা করলেই দেশ স্বাধীন হয়ে যায়!’!
ও হ্যা ঠিকই বলেছেন- স্বাধীনতা কোন ছেলের হাতের মোয়া না যে একজন ঘোষনা করলেই দেশ স্বাধীন হয়ে যায়। যে শেখ মুজিবের কথা বললেন- সে গ্রেফতার হয়ে তার পরিবারকে পাকিস্তানী সেনাদের জিম্মায় এবং মাসিক ১৫০০ রুপি ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়ে করাচীর কারাগারে বন্দী থাকলেই দেশ স্বাধীন হয়ে তিনি জাতির পিতা হয়ে যেতে পারেন না।
 
আবার অপর দিকে একজন মেজর জিয়া তার নিজের জীবনের উপর কতখানি ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করে ‘স্বাধীনতার ঘোষনা’ দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে ঝাপিয়ে পরেছিলেন- সেটা বোঝার মতো বুদ্ধি, যুক্তি, বাস্তবতা আপনার মতো গর্তজীবির পক্ষে কিভাবে সম্ভব- বলেন তো আপনার মুখেই শুনি।
 
“এ দেশকে নিয়ে অনেকের অনেক কিছু চাওয়ার আছে, আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। এ দেশ থেকে আমি যা চেয়েছিলাম তার চেয়ে বেশি পেয়েছি।”
 
শেষটায় সত্যই বলেছেন।
এই দেশটাকে নিয়ে আপনার, আপনাদের কিছুই চাওয়ার নেই। থাকবে কেন? নিজেদের আখের তো গুছিয়েই নিয়েছেন। আর দেশের জনগণ বার্ষিক আয় করছে মাত্র ১৫০০ ডলার যা এই পৃথিবীরই অন্য প্রান্তের দেশে দেশে একজন ট্যাক্সি ড্রাইভারের মাত্র এক সপ্তাহের আয়।
 
বাংলাদেশের একজন মানুষ সারা বছর আয় করবে ১৫০০ ডলার আর অন্য দেশে সেই ১৫০০ ডলার আয় করবে একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার মাত্র এক সপ্তাহে!
 
বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে মরুক, বিনা চিকিৎসায় মরুক, বস্ত্রহীন থাকুক আর আপনি, আপনারা হাচিনার মতো নষ্টাদের তোষামদী করে ভিসি হবার চেষ্টা করবেন, দেশের মানুষ অশিক্ষিত-কুশিক্ষিত থাকুক, তোষামদ থাকুক, সভ্যতা না শিখুক- এসবই তো আপনার চেতনা।
 
তাই না মিস্টার জাফর ইকবাল!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *