এই পৃথিবীর ‘পঞ্চম দীর্ঘতম সীমানা’ ভাগাভাগি করছে বাংলাদেশ ও ভারত, যার দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৪,০৯৬ কিলোমিটার বা ২,৫৪৫ মাইল। এই ল্যান্ড বর্ডারে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী গত ৪৫ বছরে ভারতীয় বিএসএফ এর গুলিতে এই পর্যন্ত কমপক্ষে ১,৩৯১ জন বাংলাদেশী মারা গেছে।
সোজা ভাবে বললে, ভারত বাংলাদেশে সীমান্তে ঠান্ডা মাথায় ১৪০০ নিরীহ বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা করেছে। এবং এখনও করে যাচ্ছে!
এই ল্যান্ড বর্ডারে-ই ফেলানীকে ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স সদস্যরা ধর্ষন করেছে, হত্যা করেছে।
এই ল্যান্ড বর্ডারে বিএসএফ কাউকে দেখা মাত্র উপর্যপুরি গুলি করে হত্যা করে- যেন ঠিক পাখি শিকার করছে!
একটা দেশ ঠিক কতটা অসভ্য হলে, নোংড়া মানসিকতাসম্পন্ন হলে, বন্য হলে- ‘আক্রান্ত হবার কোন সম্ভবনা না থাকা সত্বেও’ অস্ত্রহীন, আত্মরক্ষার ক্ষমতাহীন একজন ‘মানুষ’-কে গুলি করে হত্যা করতে পারে!
বছর কয়েক আগে এই আমরাই দেখেছি ঐ বিএসএফ সদস্যরা একজন বাংলাদেশী গরু ব্যবসায়ীকে কিভাবে নিষ্ঠুর নির্যাতন করে, নগ্ন করে পিটিয়ে পিটিয়ে নারকীয় হত্যাকান্ড চালিয়েছে! সেই দৃশ্য আবার তারাই ভিডিওতে ধারণ করে তা ইউটিউবে পর্যন্ত প্রচার করছে!
পৃথিবীর ইতিহাসে ভারতীয়দের মতো বর্বর, অসভ্য নোংড়া মানসিকতাসম্পন্ন দ্বিতীয় কোন ‘বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স’ খুঁজে পাওয়া যায় না।
চলুন, এবার আমরা এই পৃথিবীর ঠিক উল্টো দিকে ভিন্ন দু’টো দেশের আরও দু’টো ল্যান্ড বর্ডার ঘুরে আসি।
বর্ডারটা আমেরিকা ও মেক্সিকোর মধ্যে। দেশদু’টিতে পার্থক্য ব্যাপক। প্রতিনিয়ত স্প্যানিশ লাতিনোসহ মেক্সিকানরা ব্যস্ত থাকে আমেরিকায় ঢুকে পরে ‘সোনার হরিণ’ এর নাগাল পেতে। পায়ও।
বার্ষিক মাত্র ৮ হাজার ডলার আয়ের দেশ থেকে ৫৫ হাজার ডলার আয়ের দেশে ঢুকে পরা যায় মাত্র একটা অরক্ষিত ও নিরাপদ বর্ডার পারি দিয়েই।
কে না চাবে এই সহজ বর্ডারটি ক্রস করতে?
কিন্তু আমেরিকার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বা ইউএস বর্ডার পেট্রোল এজেন্ট কাউকে ওই সীমান্তে গুলি করে মারেনি, মারে না।
মারতে পারে না।
কারণ ‘মানুষ’ মেরে ফেলার কোন আইন নেই।
মানুষ কিভাবে ‘মানুষ’কে মারবে?
মার্কিন ভুখন্ডটি আমার দেখা এই পৃথিবীর সবচে ‘পবিত্র ভূমি’, ‘সবচে নিরাপদ ভূমি’।
এই ভূখন্ডটি শুধু ‘ল্যান্ড অব অপর্চুনিটি’-ই নয়, ‘গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও মানবাধিকার’ এ পরিপূর্ণ এক ‘স্বর্গরাজ্য’।
এই ভূখন্ডের ভেতরে কেউ কারো গায়ে হাত তুলতেও পারে না।
সেই মানুষটি কোন দেশের, কোন কালারের, বেটে না লম্বা, চাইনিজ না রাশান- তাতে কিছুই এসে যায় না। মুসলিম না ইহুদী, নাস্তিক না কমুনিষ্ট- জানতে চাওয়া হয় না।
শুধুমাত্র একটি ‘বিষয়’-ই বিবেচনায় আসে- সে ‘মানুষ’ কি না? চেহারায়, গঠনে, রক্তের রঙ এ যদি সে ‘মানুষ’ হয়- তাহলে তার গায়ে কিভাবে হাত তোলা সম্ভব!
এই ভূখন্ডে এটা অসম্ভব। এটা আমেরিকা তার ভূখন্ডে নিশ্চিত করেছে।
এবং যদি ‘সেই মানুষটি’ ১৮ বছরের নীচের কোন ‘মানব শিশু’ হয়- তাহলে তার জন্য রয়েছে অবারিত সুযোগ।
তাকে বিনা বাক্য ব্যয়ে- দেয়া হবে মার্কিন গ্রীনকার্ড।
১৮ বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত তার থাকা, খাওয়া, চিকিৎসাসহ স্কুলিং সম্পূর্ণভাবেই বহন করবে ইউএস গভর্ণমেন্ট।
আর যদি ১৮+ হয়, তাহলে তাকে আটক করে ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে প্রথমে জামা-কাপড় ও খাবার, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে- ইমিগ্রেশন জাজ এর কাছে নেয়া হবে। জাজ শুনবেন ঠিক কি কারণে সে মার্কিন ভুখন্ডে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করেছে? তার বিরুদ্ধে কোন সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ রয়েছে কি না। এবং জাজ তার বিবেচনা মতো রায় দিবেন- অধিকাশ ক্ষেত্রেই ‘ইনোসেন্ট’দের গ্রীনকার্ড দেয়া হয়, অথবা অবস্থা বুঝে বেলবন্ড বা বিনা বেলবন্ডে জামিন দিয়ে ওয়ার্ক পারমিট দেয়া হয় অস্থায়ীভাবে আমেরিকায় বসবাস করার জন্য।
এই পৃথিবীতে (আমেরিকা/ ইওরোপের বাইরে) আর একটা দেশও পাবেন না- যেখানে অবৈধ কাউকে এতটা ‘আদর-আপ্যায়ন’ করা হয়।
মুসলিমদের তথাকথিত পবিত্রভূমি আরবের দেশগুলিতে অবৈধদের কি করা হয়? মালয়েশিয়া, সিংগাপুরে কি করা হয় অবৈধদের ধরে ধরে?
আমেরিকা’র সংগে আরও একটা দেশের বিশাল দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, সেটা কানাডা। ঐ সীমানার দৈর্ঘ্য ৮,৮৯১ কিলোমিটার। এই সীমান্তটা বলতে গেলে পুরোটাই উম্মুক্ত। বাড়ীঘর দেখলে বোঝার কোন উপায়ই নেই যে কোনটা আমেরিকায় পরেছে আর কোনটা কানাডায়।
চলুন, আপনাদের আজ ‘ডরবি লাইন’ এর গল্প শুনাই।
আমেরিকার ভারমন্ট ষ্টেট এর ওরলেন্স কাউন্টি এবং কানাডার কুইবেক প্রভিন্সের স্ট্যানষ্টেড এর রক আইল্যান্ড ডিষ্ট্রিক্ট এ আমেরিকা-কানাডার ল্যান্ড লাইন বর্ডারের একটা অংশের নাম ‘ডরবি লাইন’।
এই ডরবি লাইনের উপরেই অবস্থিত হাসকেল ফ্রি লাইব্রেরী ও অপেরা হাউজটি।
এই লাইব্রেরীটির কিছু অংশ পরেছে আমেরিকাতে আর বাকী অংশ কানাডায়। লাইব্রেরীর কিছু সেলফ আমেরিকায় কিছু কানাডায়। বই নেয়া বা জমা দেবার অফিসের অর্ধেকটা আমেরিকায় আবার লাইব্রেরীর ভেতরে বসে বই পড়ার চেয়ার-টেবিলগুলি পরেছে কানাডায়।
এটাই আমেরিকা।
এটাই কানাডা।
এখান থেকেই সভ্যতা শিখতে হয়। পারস্পারিক সভ্যতা, সৌহার্দ্য, সম্মান জানাতে শিখতে হয় এভাবেই।
যাক, সেসব অপ্রাসংগিক।
মুল প্রসংগে ফিরে আসি চলুন। মুল প্রসংগটি ছিল ভারতবর্ষ নিয়ে।
১৯৪৭ সালের আগষ্টে বৃটিশদের থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর ভারতীয় রিপাবলিক নিজ দেশে গণতান্ত্রিক শাসন বেশ সুন্দরভাবেই কায়েম রেখেছে- একটিবারের জন্যও তাদের ‘গণতন্ত্র’ পথচুত্য হয়নি। যদিও সেই গণতন্ত্রে পশ্চিমের মতো সৌন্দর্য্য খুঁজে পাওয়া মুশকিল। যাই হোক কাগজে কলমে অন্তত রয়েছে তো!
ভারত মূলত ২৯টা ষ্টেট নিয়ে একটি রিপাবলিক।
ভারত যদিও ইউনাইটেড ষ্টেট, কিন্তু ভারতীয় ষ্টেটগুলি আহামরী কোন স্বাধীনতা ভোগ করে না।
মজার বিষয়টা হচ্ছে- সামাজিক সভ্যতা, শিষ্টাচারে বাংলাদেশ ভারতের চেয়েও অনেকগুন বেশী এগিয়ে।
তবে, বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা এবং ‘নিজ নাগরিকদের জন্য অর্থনৈতিক পলিসি’ ব্যতীত ভারতে সেভাবে উল্লেখ করার মতো কোন বড় অর্জন নেই।
‘অর্থনৈতিক শক্তিশালী পলিসি’ ভারতকে যতটা সমৃদ্ধি দিচ্ছে ঠিক তারচে অনেক বেশী ভারতকে টেনে নামাচ্ছে তাদের করাপ্টেড প্রশাসন, রাষ্ট্রিয় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং প্রতিবেশীদের দমনের নামে অর্থনৈতিক অপচয়ে।
আদতে ভারত স্রেফ একটা ‘বাচ্চা হাতি’।
এই বাচ্চা হাতির খাবার জোগাড় করতেই যেখানে ভারত অসহায়- সেখানে তারা অস্ত্র প্রতিযোগীতার নামে পিছিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
অপরদিকে জুয়া, মদ, মেয়ে মানুষ নিয়ে ফূর্তি আর সিনেমায় সফলতা ও টাওটগিরি ছাড়া ভারতের আর কোন উল্লেখযোগ্যতা খুঁজে বের করা কষ্টকর।
ভারত এমন কোন ‘রসগোল্লা’ না যে অন্য কোন দেশের মানুষ বৈধ বা অবৈধভাবে অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে বসবাস করবে বা চাকুরী করবে। বরং বাংলাদেশে বৈধ-অবৈধভাবে এসে ভারত থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ লোক বসবাস করছে, চাকুরী করছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্য, ফারইষ্ট-এও ভারতীয়রা শ্রম বিক্রি করে জীবন পার করছে।
বাংলাদেশ- ভারতের পঞ্চম বৃহত্তম ফরেন রেমিটেন্ট আয়ের সোর্স কান্ট্রি। এসব আয় শুধুই জনশক্তি আয় থেকে। এর বাইরেও রয়েছে রপ্তানী আয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাকিং করা টাকা।
বাংলাদেশের মানুষের বার্ষিক মাথাপিছু আয় গড়ে ১৫২৪ ডলার, আর ভারতীয়দের বার্ষিক গড় আয় ১৮৫০ ডলার।
বাংলাদেশে যদি সুশাসন কায়েম করা যায়, রাষ্ট্রিয় চুরি-ডাকাতী ও ঘুষ বন্ধ করা সম্ভব হয় তাহলে ভারতকে টপকে বাংলাদেশের বার্ষিক গড় হয় কয়েকগুন বেশী হতে ম্যাক্সিমাম সময় লাগবে ২ বছর।
সার্বিক বিচারে বাংলাদেশ- ভারতের চেয়ে অনেক বেশী আকর্ষক একটা দেশ।
ভারতীয়রা এখনও রাস্তায় প্রশ্রাব করা জাতি। বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে পোলিও মুক্ত দেশ- কিন্তু ভারত এখনও পোলিও মুক্ত হতে পারেনি।
ভারতের ১,৮৫০ ডলার বার্ষিক মাথা পিছু আয়ের বিপরীতে শ্রী লংকার ৪০০০ ডলার, মালডিভস এর ১০,০০০ ডলার, ভুটানের ৩,০০০ ডলার আর চায়নার ৯,০০০ ডলার নমিনাল জিডিপি।
ভারত কিসের বাহাদুরী করে- আমি অন্তত বুঝি না।
ওদেশের মানুষ রাস্তায় বাথরুম করে, রাস্তায় খায়, বড় একটা অংশ এখনও ‘খেয়ে না খেয়ে’ দিন পার করে- তাদের বাহাদুরী কিসের?
ভারতীয় কোন প্রযুক্তিই শক্তিশালী ও রুচিকর নয়।
বাংলাদেশের রাস্তায় চলা মারুতি গাড়ীগুলি দেখলেই ভারতীয়দের শক্তি ও সামথ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
মাস ছয়েক চলার পরই সেই মারুতির একটা একটা করে অংশ খুলে খুলে পরতে থাকে!
বাজাজের সিএনজিগুলিতে একটু বৃষ্টি হলেই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়- ঠেলে ঠেলে গ্যারেজে নিতে হয়।
১২ লাখ ভীতু সৈন্য আর গোটা কয়েক পারমানবিক বোমা-ই ভারতের সাহস। সোভিয়েত আমলের কয়েকটা জং পরা বন্ধুক দিয়ে তারা বাংলাদেশী হত্যা করে চলছে। অপরদিকে পাকিস্তানীরা প্রতি মাসেই গড়ে দু’চারটে করে ইন্ডিয়ান আর্মিকে হত্যা করে ঠিক যেন বাংলাদেশী হত্যার প্রতিশোধ নিচ্ছে।
একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, বিশাল ভারত ও তার একশ ত্রিশ কোটি জনসাধারণকে রক্ষার জন্য ১২ লক্ষ সেনাসদস্য কিছুই না। ভারত বিশাল দেশ। ১২ লক্ষ সৈন্য দিয়ে ভারত তার নিজ দেশকে রক্ষা করার ক্ষমতা রাখে না।
অপরদিকে বর্তমান সময়ে কোন দেশ চাইলেই পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহার করার সাহস রাখে না- ভারতের তো সেই সাহস নেই-ই।
একমাত্র আমেরিকা-ই দু’বার পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সেটা জাপানের হিরোশিমা আর নাগাসাকি শহরে। এরপর প্রায় শত বছর হতে চলছে- দ্বিতীয় কোন দেশ আজ অবধি পারমানবিক হামলা চালানোর স্পর্ধা করেনি কারো উপর।
ভারতীয় পারমানবিক বোমাগুলি স্রেফ সো-পিস হিসাবেই দিল্লীর সৌন্দর্য্য বর্ধন করে, করবে।
আর আপনারাতো জানেনই যে, পাকিস্তান সীমান্তে মাথা উচু কথা বলার আগেই ভারতীয় সেন্যদের লাশ পরে যায়।
সেই ভারত বাংলাদেশের উপর খবরদারী করে!
সোভিয়েট ইউনিয়ন ভেংগে টুকরো টুকরো হয়ে যাবার পর ‘রাশিয়া’ নামের ষ্টেটটি অন্তত সোভিয়েট ইউনিয়নের উত্তরাধিকারিত্ব পেয়েছে। কিন্তু ভারত যেদিন টুকরো টুকরো হয়ে যাবে- সেদিন তো ভারতের কোন উত্তরাধিকারীও থাকবে না এই পৃথিবীতে!
দিল্লী ভারতের ক্যাপিটাল টেরিটরী, এটা একটা ডিষ্ট্রিক্ট মাত্র কোন ষ্টেট নয়। এর আয়তন মাত্র ৪২ বর্গকিলোমিটার।
ভারত ভেংগে গেলে কে করবে তার প্রতিনিধিত্ব?
চায়নার তিবেট থেকে বিতারিত হবার পর ভারত দালাই লামা’কে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালা’য় আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়। ধর্মশালায় বসে রাজকীয় আথিতেয়তায় দালাই লামা অখন্ড চায়নার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত পাকিস্তানী প্রদেশ বেলুচিস্থানকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করতে এমন কোন অপচেষ্টা নেই যা করে যাচ্ছে না। ভারত একটি স্বাধীন সভ্য দেশ সিকিম’কে দখল করেছে, হায়দ্রাবাদ’কে দখল করেছে। নোংড়ামী আর নষ্টামী ভারতের রন্দ্রে রন্দ্রে।
কাশ্মিরী মুসলিমদের উপর অর্ধ শতাব্দীকাল ধরে ভারত যে বর্বর গণহত্যা ও অপশাসন, নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে- তার ফল ভারতকে ভোগ করতে হবে।
পূর্ব পাকিস্তান যখন টানা ৯ মাস যুদ্ধ করে পাক-হানাদার বাহিনীকে পরাস্থ করার দ্বারপ্রান্তে ঠিক তখনই নিজেদের বাহাদুরী দেখাতে এবং পাকিস্তানী সৈন্যদের ফেলে যাওয়া ভারী ট্যাঙ্ক, অস্ত্র লুটপাট করতে ভারত ডিসেম্বরে এসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সক্রিয় যুদ্ধে অংশ নেয়।
পাকিস্তান পরাজিত হয়।
বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বোভৌম দেশ হিসাবে নিজেদের বিজয় অর্জন করে।
কিন্তু ভারত বাংলাদেশের সেই বিজয় আজও মেনে নিতে পারেনি- আর তাই তো তারা সেদিনের সেই পাকিস্তানের পরাজয় ও বাংলাদেশের বিজয়কে অস্বীকার করে এবং সেই যুদ্ধকে ‘ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ’ ও ভারতের বিজয় হিসাবে হিসাবে প্রচারণা চালায়।
শেখ মুজিবের শক্ত অবস্থানের কারণে সেদিন ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয় ঠিকই কিন্তু শত শত কোটি টাকার বাংলাদেশী সম্পদ, পাকিস্তানীদের ফেলে যাওয়া ট্যাঙ্ক, কামান, অস্ত্র এবং ব্যাংক ডাকাতি করে নগদ অর্থ নিজ দেশে নিয়ে যায় ভারতীয়রা।
ভারতের কোন প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র নেই।
কিভাবে থাকবে? ভারত শুধুই প্রতিবেশীদের ধন-সম্পদ চুরির নেশায় ব্যস্ত। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে কিভাবে সুবিধা আদায় করবে কিন্তু বিনিময়ে কিছুই দেবে না এই অতিক্ষুদ্র মানসিকতায় পুর্ণ একটা জাতি।
ভারতের কোন বন্ধু থাকতে পারে না।
অসভ্যদের কোন বন্ধু থাকে না।
ভারতের মতো দেশকে শায়েস্তা করতে উপযুক্ত প্রতিবেশী হলো পাকিস্তান।
ভারতের চারপাশের দেশগুলি’র এখন মহান দায়িত্ব হলো- ভারতকে ভেংগে টুকরো টুকরো করে দেয়া।
ভারত ভেংগে গেলে দুই ডজনেরও বেশী নতুন দেশ সৃষ্টি হবে। সেই দিনটাই হবে ভারতীয় প্রতিবেশীদের জন্য প্রকৃত আনন্দভরা দিন।
ভারত ভেংগে গেলে নেপাল খুশী হবে, মালডিভস খুশী হবে, বাংলাদেশ খুশী হবে, শ্রী লংকা মিয়ানমার ভুটান সিকিম সকলেই আনন্দ উদযাপন করবে। থাইল্যান্ড চায়না আফগানিস্থান সকলেই খুশী হবে।
বাংলাদেশ প্রতিবেশী হিসাবে পারে পশ্চিম বঙ্গকে, আসাম, মেঘালয়, সিকিম, ত্রিপুরা, বিহারকে।
আমি ভারতের অনেকগুলি প্রদেশ অনেকবার ভ্রমন করেছি। ভারতের কেন্দ্রিয় সরকার তার অহিন্দীভাষী প্রদেশগুলির সংগে সবসময়ই বিমাতাসুলভ আচরণ করে থাকে। বিশেষ করে পশ্চিম বাংলা থেকে ‘বাঙলা ভাষা’র বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বেশ জোরে-সোরে। অর্থনৈতিকভাবেও ভারতবর্ষের পূবের প্রদেশগুলি কেন্দ্রের সহায়তাবঞ্চিত। রাজধানী নয়া দিল্লী থেকে কেউ যদি গৌহাটি বা ত্রিপুরা কিংম্বা পাটনা ভ্রমনে যায়- সে ভাবতেই পারবে না পুরোটাই ভারতবর্ষ- এতটাই বৈষম্য।
কোলকাতার বাইরে পশ্চিম বংগের কোন শহর-ই খুঁজে পাওয়া যাবে যেখানে উন্নতি চোখে পরবে। আর বৃটিশ ভারতের প্রাক্তন রাজধানী কোলকাতা তো কয়কেশ বছরের পুরানা শহর। অথচ সেই কোলকাতাতেও আজ বাঙালীরা সুবিধা-বঞ্চিত।
দৃশ্যত ভারত বাংলাদেশের উপর তার প্রভুত্ব চাপানো শুরু করেছে ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত একটা অযোগ্য ও ব্যর্থ তত্ববধায়ক সরকারের সময় থেকে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তখন ভারতের আগ্রহকে সমর্থন জানিয়েছে সেই মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকার। তার আগে ভারত বাংলাদেশের উপর খবরদারী করার সুযোগ কমই পেয়েছে।
এরপর তাদের সেবাদাসী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহন করে বাকী জীবন ক্ষমতায় থাকার হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে একের পর এক দেশবিরোধী চুক্তি করে ভারতের হাতে বাংলাদেশের সর্বময় ক্ষমতা তুলে দেয়।
আজ ভারত বাংলাদেশের ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট থেকে শুরু করে বিনিয়োগের নামে দেশের প্রধান শিল্পগুলি হাতিয়ে নিয়েছে। রামপাল কয়লা বিদ্যুতের নামে সুন্দরবনকে ধ্বংশের প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। বিনা ভাড়ায় তাদের ভাড়ী গাড়ীগুলি চালিয়ে নিচ্ছে আমাদের কষ্টের টাকায় নির্মিত সড়ক দিয়ে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধ্বংশ করতে সামরিক মেমোরেনডাম করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শক সেজেছে দেশের মুদ্রা ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রন নিতে- হ্যাকিং করে ৮১ মিলিয়ন ডলার সরিয়েছে ফিলিপিন্সে এইতো সেদিন।
আর বাংলাদেশের ভেতরে কাজ করছে প্রায় ৯৫ হাজার ‘র’ ফোর্স।
মুলতঃ ‘র’ ফোর্সই আজ রাব, ডিবি, পুলিশে ঢুকে কথিত সন্ত্রাস ও জংগী দমনের নামে একের পর এক হত্যা করে যাচ্ছে দেশের বিরোধী মতকে।
নষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এসএসএফ এর শতকরা ৯০ভাগ সদস্যই ভারতীয় র’র সদস্য।
ঠিক একই ভাবে ভারত একের পর এক পাশ্ববর্তী দেশগুলিতে নিজের আধিপত্য বিস্তারে সন্ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে।
ভারতকে এই ‘সন্ত্রাসী ও নোংড়ামী’ খেলা বন্ধ করতে হবে- বন্ধ করাতে হবে।
এই নোংড়ামী খেলা বন্ধ করতে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের মানুষকে সচেতন করতে হবে। আত্মমর্যাদাবোধ জাগাতে হবে।
আর এজন্য সর্বপ্রথম বাংলাদেশের মানুষকে জাগতে হবে।
মাথায় পতাকার পট্টি বেঁধে আর শাহবাগে গিয়ে একে অপরের ফাঁসি চাই ফাঁসি করে নয়।
ভারতীয় প্রডাক্টদের চিহ্নিত করতে হবে।
ভারতীয় কেনা দালাল চেতনাবাদী জাফর ইকবাল, আনিসুল হক, মতিউর রহমান, ইমরান সরকারদের মতো নস্টামী করে নয়, ধর্মকে গালি দিয়ে নয়, মানুষকে বিভক্ত করে নয়।
দেশকে ভালবাসতে হবে কাজ করে। অপরকে কাজ করতে উৎসাহিত করে। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হতে হবে কাজ করে, পরিশ্রম করে।
আওয়ামী লীগের মতো চুরি করা টাকা দিয়ে শক্তিশালি হওয়া যায় না- বড় চোর হওয়া যায় মাত্র। সেই চুরির টাকা শুধুই বিদেশে পাচার করা যায়!
আস্তে আস্তে ভারতীয় পন্য বর্জন করতে হবে।
বাংলাদেশে ভারতীয় শাড়ী আর থ্রি-পিস এ সয়লাব। অথচ দেশের মেয়েরা বুঝেই না যে ওসব হাবিজাবি থ্রি-পিস নিজেকে ঝকঝকে মনে হলেও বাস্তবে ওসব পরে কোন আরাম তো পাওয়া যায়ই না- আর দেখতে ‘ভুত’ এর মতো লাগে। আধুনিক যুগে ওসব বেমানান। তারচে বরং থাইল্যান্ড বা চাইনিজ টপস পরুন- আরামদায়ক, স্মার্ট ও রুচিশীল মনে হবে।
সর্বস্তরে ভারত বিরোধীতায় নামতে হবে- আর এজন্য অবৈধ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে।
আমাদের বেঁচে থাকার স্বার্থে ভারতকে আর আগ বাড়াতে দেয়া যাবে না- ভারতকে ভেংগে ফেলার কোন বিকল্প নেই।
প্রয়োজনে, ভারতকে ধ্বংশ করতে চায়না, পাকিস্তানীদের সংগে জোট বাঁধতে হবে।
উপরে চায়না, পশ্চিমে পাকিস্তান আর পুর্বে রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
ভারতকে নীচে ভারত মহাসাগরে গিয়ে ডুবে মরতে হবে!
সংগে ভারতীয় দালালদেরও সাগরে ছুড়ে মারতে হবে!
নষ্টগুলি সব একসংগে মরুক।