ড্রিমার


‘ডেকা’ নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে।
এই ডেকা (DACA) র মানে হলো Deferred Action for Childhood Arrivals.
 
বিষয়টির অবতারণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
বিল গেটস এবং মার্ক জাকারবার্গকেও দেখলাম ‘ড্রিমার’দের পক্ষে বেশ প্রচারণা চালাচ্ছেন।
 
কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটা দুর্দান্ত কথা বলে ফেলেছেন- যে কথাটি ওঁদের সব কথাকে ম্লান করে দিয়েছে।
‘মানুষ তাদের শিশু মনে করলেও আসলে তারা যথেষ্টই বড়। তাদের জন্যে আমার ভালোবাসাও রয়েছে, আর আমি আশাবাদী যে কংগ্রেস তাদের যথাযথই সহায়তার ব্যবস্থা করতে পারবে।’
 
‘আমি কংগ্রেসের সদস্যদের সাথে কথা বলে এ নিয়ে সঠিক কাজটি করতেও বলেছি। আর সত্যিই আমাদের কোনো উপায় ছিলনা। আমি মনে করি এখন এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী সঠিক সমাধানের দিকেই যাচ্ছে।’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একথাটিও সংযুক্ত করেছেন।
 
প্রেসিডেন্ট এর কথাটা আমার মনে ধরেছে।
 
প্রেসিডেন্ট ওবামা বলতে গেলে একটা জোড়াতালি দিয়ে হাবিজাবি একটা অস্থায়ী ব্যবস্থা করে সমস্যাটিকে জিইয়ে রেখে গিয়েছিলেন। কোন স্থায়ী সমাধান ছিল না তার ‘এক্সিকিউটিভ অর্ডার’এ।
 
যেসব শিশুরা বাবা-মায়ের হাত ধরে আমেরিকায় এসেছিল এবং বাবা-মা’র সংগে সংগে নিজেরাও এখন ‘আনডকুমেন্টেড’ হয়ে পরেছে এবং এরা মুলত আমেরিকার বাইরের কোন দেশ সম্পর্কে অবগত নয় সুতরাং সম্পূর্ণ মানবিক ভেবেই প্রেসিডেন্ট ওবামা এদের ‘ওয়ার্ক অথরাইজেশন’ দিয়েছিলেন।
 
ওয়ার্ক অথরাইজেশন কোন সমস্যার সমাধান নয়।
 
প্রেসিডেন্ট ওবামা তার ৮ বছরের প্রেসিডেন্সীর সময়কালে আমেরিকার অবৈধ ইমিগ্রান্টদের বিষয়ে কোন বাস্তবসম্মত এবং স্থায়ী সমাধান দিয়ে যেতে পারেননি।
 
অথচ এই অবৈধ বা আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টদের সমস্যাটা আমেরিকার অনেক বড় একটা জাতিয় সমস্যা এবং যে সমস্যাটি দিনকে দিন বেড়েই চলছে।
 
চাইলেই এতএত নিরীহ মানুষকে দেশ থেকে জোর করে বের করে দিতে পারে না। আবার বর্তমান আইনে এদের কাউকেই গ্রীনকার্ড দেয়াও সম্ভবপর নয়।
 
সমস্যাটি জিইয়ে রয়েছে প্রায় দুই যুগ ধরে এবং প্রতি বছরই সংখ্যাটি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েই চলছে।
 
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাদামাটা কোন ভদ্র প্রেসিডেন্ট নন।
তিনি পোড় খাওয়া ব্যবসায়ী এবং ভেরী স্মার্ট ম্যান। যেটা বুঝেন সেটা বলে দেন এবং করেও দেখান। ওনার ভেতরে কোন মেকীত্ব নেই।
 
দোষে গুনেই মানুষ। ওনিও দোষমুক্ত নন। কথা বেশী বলেন। কাউকে পড়োয়া করেন না।
 
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও একটি বিষয়ে হাত দিয়েছেন। সেটা হলো আমেরিকান সিটিজেনরা চাইলেই আর তাদের বাবা-মা এবং ভাইবোনদের গ্রীনকার্ড করিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন না। কংগ্রেসে বিল উঠেছে, সম্ভবত আইনটি পাস হবে।
 
আমি এটাকে একটা ভালো এবং যুক্তিযুক্ত আইন বলবো।
আমেরিকার স্বার্থ বিবেচনা করলে- আইনটি বাস্তবসম্মত এবং দরকারী।
 
আমার নিজের দেখা- বাংলাদেশী আমেরিকানরা তাদের বৃদ্ধ বাবা-মা’দের গ্রীনকার্ড করিয়ে আমেরিকায় নিয়ে আসেন। তারা বয়স্ক মানুষ। এখানে এসে কিছুই করতে পারেন না। বসে বসে সংসারের কাজে ছেলে-মেয়েদের সাহায্য করেন। বিস্তর নির্যাতনের অভিযোগও পাওয়া যায় বৃদ্ধদের কাছ থেকে তাদের নিজ ছেলে-মেয়ে-ছেলের বউদের বিরুদ্ধে।
 
৫ বছর বসবাস করার পর এরা আমেরিকান সিটিজেনশীপ পেয়ে যান।
তারপর শুধু আনন্দ আর আনন্দ। শুয়ে বসে সরকারী মোটা বেনিফিট খান, ফ্রি চিকিৎসা পান।
 
এদের দিয়ে আমেরিকা কোন উপকার পায়না। দু’পয়সা ট্যাক্সও এনারা দেন না।
 
কিন্তু আমেরিকান সরকারের কাছ থেকে বিশাল সুবিধা নিয়ে নিচ্ছেন। এটা কোন ভাল আইন না কোন দেশের জন্যই।
 
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই বিষয়টিতে এবার হাত দিয়েছেন।
 
আমি বিশ্বাস করি কংগ্রেস এবার একটা সিদ্ধান্তে আসবে। আমেরিকার ইমিগ্রেশন সমস্যাটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হাত ধরেই একটা যৌক্তিক সমাধানে পৌছবে।
 
মাঝে মধ্যে ট্রাম্পের মতো কিছু পাগলা প্রেসিডেন্ট দরকার হয়।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *