এক ভদ্রমহিলা একদিন আসলেন প্রফেট মুহাম্মদ (সা) এর নিকট; বললেন, হুজুর আমার ছেলে খুব মিষ্টি খায়। আমাদের আর্থিক অবস্থাও ভালো না, কিভাবে এতো মিষ্টি খাওয়াবো। আপনি প্লিজ কিছু একটা করেন যাতে আমার ছেলেটা আর বেশী মিষ্টি খেতে না চায়।
হুজুর মুহাম্মদ (সা) ভদ্রমহিলাকে উত্তরে বললেন, আপনি সপ্তাহ খানেক পর আসেন প্লিজ।
ভদ্রমহিলা এক সপ্তাহ পর আবার আসলেন মুহাম্মদ (সা) এর কাছে। মুহাম্মদ (সা) শিশুটির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘বাবা, বেশী মিষ্টি খাওয়া তো ভালো না, তুমি আর মিষ্টি খেও না।’ বাচ্চাটি মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানালো। ভদ্রমহিলা চলে গেলন।
আবার সপ্তাহ খানেক পর সেই মহিলা খুশী মনে আমার মুহাম্মদ (সা) এর কাছে আসলেন ধন্যবাদ জানাতে এবং গভীর আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘হুজুর আপনি বলে দেবার পর ও এখন অার মিষ্টি খেতে চায় না। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন আছে। আপনি তো প্রথম দিনই ওকে এই কথাটা বলে দিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে এক সপ্তাহ সময় নিলেন কেন?’
মুহাম্মদ (সা) উত্তরে বললেন, ‘আসলে আমি নিজেও অনেক মিষ্টি পছন্দ করতাম এবং খেতাম। আমি নিজেই যে কাজটা করি সেটা তো অন্যকে না করার পরামর্শ দিতে পারি না। ঐ এক সপ্তাহে আমি নিজে মিষ্টি খাওয়া বন্ধ করি এবং তারপর ছেলেটাকে নিষেধ করি।’
এই গল্পটা আমি আমার পরিচিত মহলে অনেকবার বলেছি। অনেককে প্রয়োজনে কয়েকবার জোর করেও শুনিয়েছি। কেন জোর করে শুনিয়েছি সেটা বুদ্ধিমান পাঠকরা বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই।
এবার আলোচনায় ফিরি।
বেশ কয়েকদিন যাবৎ প্রেসিডেন্ট এরশাদের কিছু ব্যক্তিগত ছবি ফেসবুকে শেয়ার হতে দেখছি। ছবিগুলিতে কোন এক মহিলার সাথে তার বিবাহ বা ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইংগিত প্রদান করা হচ্ছে। বিষয়টা নিয়ে অনেককে দেখছি খুব মজাও নিচ্ছে এরশাদকে অারেকটু ব্যঙ্গ করার্থে। আমি প্রেসিডেন্ট এরশাদকে নিয়ে আমার কিছু কথা বলতে চাচ্ছিলাম অনেকদিন থেকেই। আমি জানি অনেকেই আমার কথার সাথে হয়তো দ্বিমত পোষন করবেন কিন্তু আমি যুক্তির বাইরে কিছু বুঝি না বা অযৌক্তিক কোন কথা শুনতে পছন্দ করি না বা গুরুত্ব দিই না; এতে কে কি বলে তাতে আমার কিছু এসে যায় নি কোনদিন এবং আজও যায় আসে না।
আরেকটা কথা বলা খুবই জরুরী যে, বাংলাদেশে সাধারণতঃ বেশীরভাগ সাংবাদিক এবং বাম ঘরণার লোকগুলি ও সেই সাথে কিছু নামকাওয়াস্তে সেলিব্রেটি প্রকান্তরে শিল্পী নিজেদের এক একজন নিজেকে ঈশ্বরতূল্য জ্ঞান করে থাকে। এবং যেহেতু প্রচারণার যন্ত্রগুলি তাদের নিয়ন্ত্রণে সুতরাং বাংলাদেশের মানুষগুলি ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় ওসব বক্তব্য গিলতে বাধ্য এবং অটোমেটিক তা শিখে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আর তার রেজাল্ট বা পরিণামে তৈরী হয়েছে বর্তমান ‘বাংলাদেশ’; যে-দেশে মানুষের চাইতে গরুর সংখ্যাই বেশী।
এবং এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে বাংলাদশে মানুষ খুঁজে পাওয়া নিঃসন্দেহে কঠিন কাজ হয়ে দাড়াবে এবং সেই দিনটা খুব বেশী দূরেও নয়। আর এই অগ্রগতির পক্ষে অত্যন্ত সুচারুভাবে, দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে প্রথম-আলো, সমকাল থেকে শুরু করে, সরকারী বেসরকারী টেলিভিষনগুলি, কতগুলি কার্যত বেয়াদব ও কুক্ষিত চেতনাধারী মুক্তমনা, ইমরানসহ শাহবাগের ছাগলগুলি, ড. জাফর ইকবাল ষাড়, মুনতাসির মামুন, ড. আনোয়ার হোসেন, হাসানুল হক ইনুসহ এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ও তার সাংগ-পাংগরা।
বিএনপি সরকারের সবচে বড় ব্যর্থতা হলো- এরা খুব বেশী কোন ভাল সাংবাদকর্মী বা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জন্ম দিতে পারেনি। যে দু চারজন আছে তারাও সম্পূর্ণ নিজ যোগ্যতা বা দক্ষতা বলে।
পৃথিবীর কোন দেশে (ভারত ছাড়া) সাংস্কৃতিক কর্মীদের বাংলাদেশের মতো এতো বেশী ‘রাজনৈতিক সচেতন’ হিসাবে দেখা যায় না এবং এর ফলাফল হলো তারানা হালিম যে নাকি বাংলা সিনেমার ভালো অভিনেত্রী হবার কথা সে হয়েছে টেলি-যোগাযোগ মন্ত্রী। তারানা হালিম টেলি-যোগাযোগের কি বুঝে?
– বোঝার দরকারটা কি? অভিনেত্রী হয়েছে তো কি হয়েছে? তার কি মন্ত্রী হবার শখ হতে পারে না। যে দেশে হাসিনা-খালেদা’রা প্রধানমন্ত্রী হতে পারে সে-দেশে তারানা মন্ত্রী হবে- এটাই তো হবার কথা!
যাক যা বলছিলাম। বাংলাদেশ জিয়াউর রহমান ছাড়া কোন সৎ এবং দক্ষ সরকার প্রধান পায় নি- এটা জাতির জন্য দুক্ষজনক।
শেখ মুজিবুর রহমান অনেক বড় নেতা ছিলেন কোন সন্দেহ নেই কিন্তু সরকার প্রধান হিসাবে সম্পূর্ণ অযোগ্য ব্যক্তিত্ব। যে কয়েক বছর তিনি ক্ষমতায় ছিলেন, সে সময়টা তিনি ব্যবহার করেছেন ‘জমিদারী’ হিসাবে; সৎ রাষ্ট্রনায়কের কোন গুণই তার ছিল না। প্রশ্নবিদ্ধ যুদ্ধকালিন অবস্থানের কথা আমি তুলবো না।
তবে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন বা মুক্তিযুদ্ধ ছিল সময়ের দাবী। সেটা শেখ মুজিবের জায়গায় যে-কোন ‘এএক্সওয়াইজেড’ নেতা থাকলেও সেটা হতো। দেশ স্বাধীন করেছে বাংলাদেশের অতি সাধারণ ছেলেরা ‘সম্পূর্ণ গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে’ এবং তাদের প্রকৃত সহায়তা করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্ব বাংলার বিদ্রোহী কর্মকর্তারা। আর শুধুমাত্র নিজ স্বার্থের জন্য ভারত সহায়তা করেছে বাংলাদেশ সৃষ্টি হতে, তবুও তো করেছে- সেজন্য ভারতকে ধন্যবাদ।
শেখ মুজিব তার জমিদারী আমলে নিজেকে কিছুদিন প্রেসিডেন্ট, তারপর আবার কিছুদিন প্রধানমন্ত্রী এরপর আবারও প্রেসিডেন্ট ইত্যাদি করা নিয়েই বেশী ব্যস্ত দিন পার করেছেন। গণতন্ত্রের জন্য বিদ্রোহ করে সদ্যস্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংশ করেছেন শেখ মুজিব। তার শাসনামলে জাতি উপহার হিসাবে পেয়েছে সেভেনটি ফোরের ভয়াবহ দুর্ভিঃক্ষ।
শেখ মুজিব নাকি বলতেন তার চারপাশে কোন সৎ লোক তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।
মজার একটা বিষয় বলি। আপনি যদি চোর হন- দেখবেন আপনার চারপাশের সবাই চোর-ডাকাত। আপনি যদি মসজিদের হুজুর হন চারপাশে পাবেন সব হুজুরের দল। আপনি যদি ইঞ্জিনিয়ার হন আপনার বন্ধুদের মধ্যে বেশীর ভাগই দেখবেন ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তারের পাশে ডাক্তার আর আমার মতো ব্যবসায়ীর চারপাশে আমি শুধু ব্যবসায়ীদেরই দেখতে পাই।
– তাহলে বলুন তো শেখ মুজিবের চারপাশে সব চোর-চোট্টা থাকতো কেন?
জন্মে সময় বলতে গেলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির কোন অবকাঠামোই ছিল না। অার যেহেতু নবগঠিত রাষ্ট্র, সেহেতু ছিল না কোন সংবিধানও।
যারা মাইক্রোসফট ওয়ার্ড চালাতে জানেন, তারা দেখবেন ওয়ার্ডে রিপ্লেস নামে- এডিট মেনুতে একটা পুল-ডাওন মেনু থাকে। আপনি যদি কোন একটা শব্দকে অন্য কোন একটি শব্দ দিয়ে রিপ্লেস করতে চান তাহলে মুহুর্তের মধ্যেই সেটা করা সম্ভব।
ড. কামাল হোসেন সাহেব ওই কাজটিই করেছিলেন। তিনি সংবিধানের ‘পাকিস্তান’ শব্দটি ম্যানুয়ালী ‘বাংলাদেশ’ শব্দ দিয়ে রিপ্লেস করে হয়ে গেলেন বাংলাদেশ সংবিধানের মহান স্রষ্ট্রা!
শুনেছি শেখ মুজিব তার স্কুল জীবনের কোন শিক্ষককে নিজের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার ছেড়ে দিয়ে নিজের সভ্যতা দেখিয়েছেন। তিনি জীবনে কি শিক্ষা পেয়েছিলেন এতেই তা পরিষ্কার বোঝা যায়। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী চেয়ার এতটাই ঠুনকো ছিল তার কাছে! শেখ মুজিব ভুলে বসেছিলেন যে- ওটা একটা দেশের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার; তার জমিদারী’র চেয়ার না।
ব্যক্তি শেখ মুজিব তার বাসায়- নিজের চেয়ার ওনাকে ছেড়ে দিলে আমার কোন বক্তব্য ছিল না। কিন্তু প্রতিষ্ঠান শেখ মুজিব একটা দেশের ‘প্রধানমন্ত্রী’র চেয়ার অন্য সাধারণ কারো কাছে ছেড়ে দেবার ধৃষ্ঠতা দেখাতে পারেন না; এটাও ক্ষমতার অপব্যবহার বা অযোগ্যতা, অদক্ষতা।
বাংলাদেশটাকে একটা বিশৃঙ্খলাপূর্ণ ভুখন্ড করে দিয়েছিলেন শেখ মুজিব। নিজে এবং নিজ পরিবারকে সারাজীবন বাংলাদেশের জমিদারী স্টাইলে ভোগ বা ধর্ষন করা জন্য তিনি একদলীয় বাকশাল কায়েম করে গিয়েছিলেন; ঠিক যেভাবে শাসিত হচ্ছে আজকের উত্তর কোরিয়া।
অনিবার্য ফলস্বরূপ একদল দেশ-প্রেমিক সৈনিক ‘সবচে খারাপ কাজটি করে’ দেশকে অভিষাপ মুক্ত করেছে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট। আজ শেখ হাসিনার কর্মকান্ড দেখে মনে হচ্ছে কিছু কিছু হত্যাকান্ড মাঝে মধ্যে অত্যন্ত জরুরী হয়ে পরে- কোন জাতিকে অভিষাপ মুক্ত করার জন্য। এত কিছুর পরও আমি কোন হত্যাকান্ডকেই সমর্থন করি না, ঘৃণা করি।
যাই হোক জিয়াউর রহমানের পরপর ক্ষমতায় আসেন জেনারেল এরশাদ। তিনি স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা চালু করেন- এটা যেমন সত্য কিন্তু তারচেও অনেক বেশী সত্য হলো একমাত্র এরশাদের আমলেই বাংলাদেশের মানুষ সবচে ভাল দিনাতিপাত করেছে। এরশাদ শাসক হিসাবে যথেষ্ঠ পরিপক্ততা দেখিয়ে গেছেন। ৮৮র বন্যায় এরশাদকে দেখা গেছে মহান দেশ প্রেমিক নেতা হিসাবে; যোগ্য রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে। ৯০র ইরাক ক্রাসিস পিরিয়ডে এরশাদ আবারও তার দক্ষতা দেখিয়েছেন বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের অবকাঠামোর মূল স্রষ্টা তো এরশাদই যদিও তিনি অনুসরণ করে গেছেন জেনারেল আইয়ব খানকে।
এরশাদের আমলে সরকার বিরোধী আন্দোলনে কেউ আহত হলে রাতের খবরে ভদ্রতা বা রাষ্ট্রের দায়িত্ব সূচক সরকারী একটা প্রেসনোট প্রচার করা হতো। ১জন নূর হোসেনের মৃত্যুই এরশাদ-বিরোধী আন্দলনকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে যায়। আর আজ শেখ হাসিনা শতশত হাজার হাজার মানুষকে প্রকাশ্যে হত্যা করে যাচ্ছে, খুন, গুম, অপহরণ সব করে যাচ্ছে- এসব কোন ব্যাপার না। অসভ্য মিডিয়াগুলির কোন মাথা ব্যাথা নেই। দেশের ছাত্রনেতারা সব ‘ভোদাই’ হয়ে বসে আছে; ডাকসুর নির্বাচন হয়নি একটি বারের জন্যও।
১৫ই ফেব্রুয়ারী খালেদা জিয়া একটি অবৈধ নির্বাচন দিয়েও খুব সাধু মহিলা। শেখ হাসিনা ৫ই জানুয়ারীর অসভ্য একটা নির্বাচনী নাটক করেও দেশের সুস্থ প্রধানমন্ত্রী। শুধু এরশাদই স্বৈরাচার। অার বাকী গুলি …?
– তেতুলের আচার?
এরশাদকে স্বৈরাচার আর অন্য দু’টিকে ‘তেতুলের আচার’ বানিয়েছে বাংলাদেশের ঐসব সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা আর মিডিয়া কর্মীরা।
তার কারণ ঐ একটাই আর সেটা হলো ‘বাংলাদেশের এসব লোকগুলি’ ‘তেতুলের আচার’ খুব পছন্দ করে। তারা কোন বিচার-বুদ্ধি ছাড়াই সাপোর্ট দেয় বেনজির ভুট্রো’কে, তারা সাপোর্ট দেয় মিয়ানমারের সুচি’কে এমনকি ইদানিং এদের আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে আমেরিকার হেলারি ক্লিনটন। বেনজির ভুট্রোর বাবা জুলফিকার আলী ভুট্রো ছিলেন বাংলাদেশের সবচে বড় শত্রু। মিয়ানমারের সুচি-ও বাংলাদেশ বিরোধী তথা মুসলিম নিধনকারীদের পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ একজন। আর আমেরিকানরা যে বাংলাদেশের ভোটারদের মতো গাধা নয়, তারা যে কোন তেতুলের আচারের লোভে লাফায় না সেটা বোঝার ক্ষমতাও ওসব ‘মিডিয়া কর্মী, চেতানাধারী, মুক্তমনাদের নেই।
এরশাদের পতনের পর বিচারপতি সাহাবুদ্দিন অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হয়ে ১৯৯১ সালে একটা ‘নিরপেক্ষ’ নির্বাচন দেন। যে দেশটি প্রেসিডেন্ট শাসিত- সে দেশের পাবলিককে ভোদাই বানিয়ে ‘বিচারপতি’ সাহাবুদ্দিন তার ক্যারিশিমা দেখিয়া ‘প্রেডিডেন্ট’ পদে নয়- নির্বাচন দিলেন ‘সংসদ সদস্য নির্বাচন’ এর। আবাল বাঙালীও সেটা খেল এবং সাহাবুদ্দিনের ধন্নি ধন্নি পড়ে গেল।
আর শেখ হাসিনার বাবার তৈরী প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির আওয়ামী লীগ এবং অপর দিকে খালেদা জিয়া প্রথম হাজবেন্ডের তৈরী প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির বিএনপিও হয়ে গেল প্রধানমন্ত্রী শাসনের পক্ষের আদর্শ (!) নিয়ে সোচ্চার। বোকাচোদা বাঙালী সেটাও হজম করে ফেলল। কি সুন্দর আদর্শবাদী দুই মহিলা!
আমার ফ্রেন্ডলিষ্টে প্রচুর বিএনপি পন্থী লোকজন রয়েছেন। তারা দেখি আবার ইসলাম পন্থীও। ইসলামের পক্ষে এদের প্রায়ই খুব সোচ্চার দেখি। আমার হাসি পায় তাদের ইসলাম প্রীতি দেখে। আচ্ছা ইসলামের কোথায় রয়েছে নারীদের ‘ইমাম’ বানানোর ফতোয়া!
আরেকটি কথা বলে নিই, পরে ভূলে যাবো।
জেনারেল এরশাদকে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন চরম অন্যায়ভাবে জেলে আটক রেখে, কোন প্রচারণা চালানোর সুযোগ থেকে অবৈধভাবে বঞ্চিত করেও আটাকাতে পারেনি। এরশাদ নিজে ৫টি আসনে বিপুল ভোটে এবং তার আরও ৩৪জন নেতা ঐ নির্বাচনে (১৯৯১) নির্বাচিত হন এবং প্রায় শতাধিক আসনে পরাজিত হন মাত্র এক থেকে তিনশত ভোটের ব্যবধানে। সিংহকে খাচায় আটকিয়ে না রাখলে নির্বাচনেও বিজয়ী হতেন সেই সিংহ পুরুষটিই।
– কিন্তু বাংলাদেশের ঐ ‘আবালগুলি’ সে কথাটি বলেছে কোন দিনও?
এরপর আসুন ২০০৯ এর নির্বাচন এ। এখানে সম্পূর্ণ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে নির্বাচন করে খালেদা জিয়ার বিএনপি পেয়েছে মাত্র ৩৫টি আসন।
একটু হিসাব করুন তো ১৯৯১ এর এরশাদ ও জাতিয় পার্টি আর ২০০৯ এর খালেদা জিয়া ও বিএনপি!
অনেক দূরে চলে গিয়েছিলাম, ফিরে আসি।
এরশাদের সাম্প্রতিক ‘ব্যক্তিগত’ ছবিগুলি যারা প্রচার করছে বা ফেসবুকে পোস্টিং দিচ্ছে তাদের সবাইকেই আমি দেখি- বিএনপি এবং ইসলামপন্থী হিসাবে। এরশাদকে নিয়ে ব্যঙ্গ করি বাঙালী খুব আনন্দ পায় দেখছি। বাংলাদেশের মানুষ অপরের চরিত্রে সামান্য খারাপ কিছু পেলে মহাআনন্দে তা ‘উপভোগ’ করে। সেটা ড. হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী শাওন এর বেলাও দেখা গেছে। একমাত্র ভুক্তভুগীই জানে তার চাহিদা এবং প্রয়োজন। ভুক্তভোগী এরশাদ যেমন জানে, ড. হুমায়ূন আহমেদ স্যার যেমন জানতেন বেগম খালেদা জিয়াও সেটা জানেন।
মোসাদ্দেক আলী ফালুকে বেগম খালেদা জিয়া বিয়ে করেছেন সৌদী আরবে। তার অনেক ডকুমেন্টই অনেকের কাছে রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া যতবার হ্বজে যান সংগে যান মোসাদ্দেক আলি ফালু সাহেবও। কেন যান তিনি? স্বামী বা সন্তান ছাড়া নারী হ্বজে যেতে পারে না- সেজন্যই তো! আমি বেগম খালেদা জিয়া’কে কোন দোষ দেব না। তিনি কোন অন্যায় করেন নি।
কিন্তু যারা ফেসবুকে, মিডিয়ায় এবং সমাজের সর্বত্র এরশাদের ব্যক্তিগত বিষয়াদি নিয়ে রসিকতা করে মজা পাচ্ছে তারা কি একটু কস্ট করে খালেদা জিয়ার ওরকম কিছু ছবি প্রচার করে নিজের চরিত্রে সততার ভারসাম্য রক্ষা করবেন?
– না সেই ক্ষমতা, যোগ্যতা বা দায়িত্ববোধ কোনটাই তাদের নাই। ছিল না; এবং হবে বলেও মনে হয় না। ক্ষুদ্র একজন মানষের কাছে ক্ষুদ্রতার চেয়ে বেশী কি কিছু আসা করা যায় কখনও?
আসল বিষয়টা হলো, বাংলাদেশের মানুষ মহিলাদের খুব পছন্দ করে। তারা মহিলাদের সংরক্ষিত আসনের নামে এমপি, কাউনসিলর, মেম্বার ইত্যাদি বানিয়ে খুব মজা পায়। সামান্য এসএসসি পাস মেয়েদের দায়িত্বদেয় কোমলমতি শিশুদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলার; আর সেই ‘শিক্ষিত শিশুরা’ একদিন ছাত্রনেতা হয়, দেশের মন্ত্রী হয় আর তৈরী হয় বাংলাদেশ। হোক- হয়ে যাক!
এবং তারা বাসায় ফিরে নিজ স্ত্রী’র তাবেদারী করেও খুব অানন্দ পায়। স্ত্রীকে খুশী রাখতে মা-বাবাকেও দূরে বা সম্পর্কহীন রেখে মজা পায়।
বাংলাদেশের পুরুষরা কি তাহলে সব নপুংসক হয়ে গেল নাকি?