একটি বিদ্রোহী আর্টিকেল


১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বরের একটা ঘটনা।
কুয়েতকে দখলদারী মুক্ত করতে ইরাকে বোমা হামলা চালানো হচ্ছে। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ বুশ- সে কি হম্বিতম্বি ভাব। ভয়াবহ সব কথাবার্তা, হুমকী।
 
তখন আমেরিকার বিমান বাহিনীর প্রধান ছিলেন জেনারেল মাইকেল জে ডুগান।
যেহেতু ব্যাপক বিধ্বংসী বিমান হামলা চালিয়েই মুলতঃ ইরাককে পশ্চাদপসারণ করানো হবে এবং এই বাহিনীর প্রধান ব্যক্তি জেনারেল মাইকেল জে ডুগান সেহেতু- কিছুটা উৎসাহের সংগে তিনিও এক সংবাদ মাধ্যমে কিছু হুমকী ধামকী প্রদান করেন ইরাকী প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ও তার বাহিনীকে।
 
ব্যস, আর যায় কোথায়?
প্রেসিডেন্ট বুশ তার পররাষ্ট্র মন্ত্রী (সচিব) ডিক চেনীকে ডেকে বললেন- একজন বিমান বাহিনী প্রধান কিভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়? রাজনৈতিক বক্তব্য দেবার জন্য অামি আর তুমি রয়েছি কেন? সে তো চাকুরী করে- আমরা যা বলবো তাই সে করবে; সে নিজে কথা বলার কে?
 
অতপরঃ পররাষ্ট্র সচিব ডিক চেনী তার অত্যন্ত বিশ্বস্ত এয়ার ফোর্স চীফ জেনারেল মাইকেল জে ডুগানকে বরখাস্ত করেন।
 
আপনাদের একটা সভ্য দেশের গল্প বলছিলাম।
এবার চলুন একটা অসভ্য দেশের গল্প শুনি।
 
গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির চক্র আবারও নতুন কায়দায় জেগে উঠেছে। তাদের রুখে দিতে হবে।”
 
এসপি হারুন আরও বলেন, ‘আপনি সবাইকে সাহস জুগিয়েছেন, আপনি বার বার বলেছেন, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীদের এ দেশের মাটিতে ঠাঁই হবে না। আপনি বলেছেন, জামায়াত-শিবির চক্রের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান। আপনি ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের একজন বিশাল মনের মানুষ। স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে, যারা স্বাধীনতাকে মেনে নেয়নি, তাদের কাউকে আপনি ছাড় দেননি। আপনার কারণে আমরা মনের জোর নিয়ে কাজ করেছি। আমরা দেখেছি হেফাজতের তাণ্ডব।’ (January 2018)
 
এতো গেল এক অসভ্য এসপি’র কথা।
আরও একজন অসভ্য এসপি’র (বর্তমানে ডিআইজি) কথাও শোনা যেতে পারে।
 
মাদক ও শিবির থেকে সাবধান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার (এসপি) চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির পিপিএম। তিনি বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে সাতক্ষীরা থেকে মাদক ও শিবির চিরুনীর মতো করে বাছাই করা হবে। (October 2014)
 
আমরা আরও দেখেছি কাউন্টার টেররিজম এর আরেক পুলিশ ডিআইজি মুনিরুলকে ঠান্ডা মাথায় তার পুলিশ বাহিনী ও রাব দ্বারা মানুষ হত্যা করে কথিত জংগীবাদের গল্প শোনাতে আবার সত্যিই যখন গুলশানের হলি আর্টিজমে জংগী হামলা হলো তখন আমরা এটাও দেখেছি ঐ দুর্দান্ত মনিরুল, শহীদুল, বেনজীরদের প্রকাশ্য রাস্তায় সত্যিকারের জংগীর ভয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শিশুদের মতো প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলতে, তাদের হাত-পা কাপতেও দেখেছি আমরা।
 
আমরা এটাও দেখেছি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য যিনি আবার একই সংগে বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ জয়নুল আবেদীনকে সংসদ ভবনের সামনেই প্রকাশ্যে অশ্লীল গালিগালাজসহ ভয়াবহ শারিরীক নির্যাতন করতে।
 
বাংলাদেশ পুলিশ এই পৃথিবীর একমাত্র লাইসেন্সড এবং সবচে ভয়ংকর সন্ত্রাসী সংগঠন।
 
এই সন্ত্রাসী পুলিশ বাহিনী দেশের সাধারণ মানুষকে প্রকাশ্যে হত্যা করে তার নাম দেয় জংগী দমন, রাতের আঁধারে হত্যা করে তার নাম দেয় ক্রস ফায়ার। এই সন্ত্রাসী পুলিশ বাহিনী শেখ হাসিনার নির্দেশে গত ৯ বছরে বিচার-বহির্ভূতভাবে হত্যা করেছে ১২,৮৫০ জন মানুষকে।
 
এই একই সন্ত্রাসী পুলিশ বাহিনী বাংলাদেশের মাটি থেকে শত শত মানুষকে উধাও করে দিয়েছে- যার পোষাকী নাম ‘গুম’।
 
পাকিস্তানী পুলিশও কোনদিন এতটা নিমর্ম হত্যাকান্ড কখনও চালায়নি। ইয়াহিয়া বা আইয়ুব খানের সময়ে এভাবে সাধারণ মানুষকে মরতে হয় নি।
 
অথচ এই পুলিশ যাদের আজ হত্যা করছে- তাদের কষ্টের উপার্জিত টাকা থেকে বেতন নেয়, ঐ বেতনের টাকায় তার নিজ স্ত্রী-পুত্র-কন্যার মুখের খাবার কিনে খাওয়ায়, জামা কিনে দেয়; ওদের মরার পর কাফনের কাপড়টিও জুটে এই দেশের সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায়।
 
এই পুলিশ বাহিনীকে আমরা দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে থানায় ধরে নিয়ে রাম দা দিয়ে কুপিয়ে উল্লাস করতে, এই পুলিশ বাহিনীকে আমরা দেখেছি সাধারণ নিরাপরাধ যুবকের চোখ তুলে নিতে, এই পুলিশ বাহিনীকে আমরা দেখছি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করতে মিথ্যা ইয়াবা বা অস্ত্র মামলায় ফাঁসাতে। এই পুলিশ বাহিনী এক দুই লাখ টাকার বিনিময়ে কন্ট্রাকে যে-কোন হত্যাও করে।
 
এই পুলিশ বাহিনী মানুষকে রাজনীতির জ্ঞান দেয়- যে মানুষের টাকায় তার সংসার চলে সেই মানুষকে।
 
আর না।
এবার ঘুরে দাঁড়াবার সময় এসেছে।
 
পুলিশ যদি আইন অমান্য করে আপনার গায়ে হাত তুলে- আপনারও অধিকার থাকবে আরেকটি অন্যায় করে ঐ পুলিশকে সাইজড করার। যেমন কুকুর তেমন মুগুর।
 
পুলিশ যদি বিনা অপরাধে আপনাকে গ্রেফতার করে, বেআইনীভাবে আপনার গায়ে হাত তুলে আপনিও তাকে ‘যা ইচ্ছে তাই’ করার অধিকার রাখেন।
 
আপনি ঘুরে না দাঁড়ালে এরা দুদিন পর আর মা-বোনদের থানায় নিয়ে নয়- আপনার বাড়ীতে গিয়েই ধর্ষন করবে মা-বোনদের। এখন ঠিক যেমনটা করে যাচেছ হাচিনা-মুজিবের আদর্শের সন্তান ছাত্রলীগ নামীয় পশুরা।
 
ঢাকার পয়ত্রিশ হাজার পুলিশকে সাইজড করা ২ কোটি মানুষের জন্য কোন বিষয়ই না।
 
দেশটাকে আজ ধ্বংশপুড়িতে পরিণত করেছে শেখ হাসিনা।
আজ অন্যজনকে মারছে এই পুলিশ, কাল আপনাকেও মারবে।
 
আপনি কি এভাবেই চলতে দিবেন?
 
আমার টাকায় বেতন নিয়ে, আমার টাকায় কেনা বন্দুক-গুলি আজ এই পুলিশ আমার বুকে তাক করার স্পর্ধা দেখায়!
 
আমার চাকর আমার গায়ে হাত তুললে সেই হাত আমি ভেংগে দিবই।
 
চাকর পালার ক্ষমতা যেহেতু আমি রাখি- চাকরকে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে সাইজড করার ক্ষমতাও আমার থাকা উচিত।
 
শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
হাচিনা নষ্ট হয়েছে, ওর বিবেক ধ্বংশ হয়েছে- কিন্তু আপনাকে প্রতিবাদ করে আপনার অধিকার সংরক্ষন করতে হবে।
 
নিজের অধিকার আদায় করার আইনী অধিকারও আপনার থাকার কথা।
 
সুযোগ বার বার আসে না।
প্রয়োজন হলে চোখ তুলে নিবেন পুলিশের, দাঁত ফেলে দিবেন। ওর রাইফেল দিয়ে ওকে বঁধ করবেন। সময়ের প্রয়োজনে আপনাকে প্রতিবাদী হতে হবে। একটা দুইটা ওসি, ডিসি, এসপি পরে গেলে দেখবেন হাচিনাও পরে গেছে! যে আপনাকে নির্দিধায় মারতে পারবে- আপনি মরার আগে তাকে মেরেই না হয় মরুন। যাকে আমি আমার নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব দিয়েছি- সে আমাকেই গুলি করবে! এতটা অবৈধ ক্ষমতা তো আর মেনে নেয়া যায় না। আমি কি বন্দুক চালাতে জানি না? নিজেকে রক্ষার সম্পূর্ণ অধিকার আমি সংরক্ষন করি।
 
নইলে সবকিছুই হারাবেন।
দু’দিন পর দেখবেন আপনার কিছুই নেই।
তখন হয়তো প্রতিবাদ করার ক্ষমতাও আর থাকবে না।
 
বাংলাদেশ এখন একটা যুদ্ধক্ষেত্রে।
আর, যুদ্ধক্ষেত্রে সভ্যতা প্রদর্শনের কোন সুযোগ নেই।
 
যুদ্ধ শেষ হবার পর সভ্যতা দেখানোর পর্যপ্ত সময় পাওয়া যাবে।